উন্নত বিশ্বে হু হু করে বাড়ছে পণ্যের দাম। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা ওইসিডি-ভুক্ত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ২০০৮ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। অর্থাৎ গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এসব দেশে এমন মূল্যস্ফীতি আর দেখা যায়নি।
প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটি গত বুধবার জানিয়েছে, জ্বালানির দাম বাড়ানোর জেরে গত এপ্রিল মাসে ওইসিডি দেশগুলোতে গড়ে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ২০০৮ সালের অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ।
পচনশীল খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাদ দিলেও বিশ্বজুড়ে পণ্যমূল্য বাড়ছে। এসব পণ্য হিসাব থেকে বাদ দিলে মূল্যস্ফীতি মার্চ মাসের ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে এপ্রিলে ২ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়ায়।
করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতির চাকা ফের ঘুরতে শুরু করার মুহূর্তে এমন মূল্যস্ফীতি বিশ্বজুড়ে নীতিনির্ধারকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। স্থির আয়ের যেকোনো মানুষের জন্যই পণ্যের দাম বৃদ্ধি খারাপ সংবাদ। এমন পরস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়িয়ে বা বিভিন্ন উদ্দীপনা কর্মসূচি শুরু করে সংকট মোকাবিলায় প্ররোচিত হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা স্বীকার করেছেন, দামের ওপর ঊর্ধ্বমুখী চাপ রয়েছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান এই মূল্যস্ফীতি স্থায়ী নয়, সেটি মহামারি পরবর্তী জীবনের সঙ্গে ভোক্তা এবং অর্থনীতি খাপ খাইয়ে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে যাবে কি না- তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ৬০ শতাংশই দখল করে রয়েছে ওইসিডি-ভুক্ত ৩৮ দেশ। এসব দেশে ভিন্ন ভিন্ন হারে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে মার্চ মাসের গড় বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে এপ্রিলে ৪ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে। কানাডায় ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে হয়েছে ৩ দশমিক ৪।
সেই তুলনায় ইউরোপীয় দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কম। এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, জার্মানিতে ২ শতাংশ, ফ্রান্সে ১ দশমিক ২ শতাংশ আর ইতালিতে হয়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ মাত্র।