করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে একরকমের নাকাল ভারত। দেশটির বিভিন্ন রাজ্য সর্বশক্তি দিয়ে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ও মানুষের জীবন রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরসঙ্গে আবার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থেকে প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্য। আর এ প্রস্তুতিতে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে, তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের ওপরই সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে।
অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো, করোনার পরীক্ষাগার বাড়ানোর পাশপাশি রাজ্যগুলো এবারে মনোযোগ দিচ্ছে করোনা আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায়। এর অংশ হিসেবে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে- পেডিয়াট্রিক বেডগুলো গুছিয়ে আনা, ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের বাবা-মায়েদের টিকার আওতায় আনা, শিশুদের কেন্দ্রে রেখে বিভিন্ন প্রটোকল তৈরি করা ইত্যাদি।
উত্তর প্রদেশ সরকার এরইমধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছে যে, ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের বাবা-মায়েরা করোনার টিকার জন্য অগ্রাধিকার পাবেন। আবার যে মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান বা দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের মায়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিতে চায় গোয়া।
তবে বেশিরভাগ রাজ্যই মূল নজর রাখছে করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায়। এর অংশ হিসেবে কোথাও পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, কোথাও নিওন্যাটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট আবার কোথাও সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিক বসানো হচ্ছে বা এসব ইউনিটে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
উদাহরণস্বরুপ মহারাষ্ট্রে দেখা যাচ্ছে তারা শিশুদের কোভিড বেডের সংখ্যা ৬০০ থেকে ২ হাজার ৩০০তে উত্তীর্ণ করার পরিকল্পনা করছে। এরমধ্যে কেবল মুম্বাইয়েই যুক্ত হবে ৫০০ বেড।
উত্তরাখন্ডে দুটি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত শিশুদের মায়েদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওডিশাও বাবা-মায়ের যেকোনো একজনকে করোনা আক্রান্ত শিশুর সঙ্গে থাকার অনুমতি দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুতেও শিশুদের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া অনেক রাজ্য শিশুদের করোনা থেকে রক্ষায় বিশেষজ্ঞ প্যানেল ও টাস্কফোর্স গঠন করছে। চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় রাজ্যগুলোর প্রস্তুতি শিশুদের কেন্দ্রে রেখে নেওয়া হলেও এর পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাস্থ্য অবকাঠামোও তৈরি করা হচ্ছে।