করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে এক যোগে টিকা প্রয়োগের কাজ শুরু করে ভারত। টিকার উভয় ডোজ সম্পন্ন করা ভারতীয়রা এতোদিন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি সম্বলিত সনদপত্র হাতে পেতেন। তবে নিয়ম পাল্টেছে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। এখন থেকে রাজ্যটির করোনা টিকা নেওয়া ব্যক্তিরা নরেন্দ্র মোদির বদলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া সার্টিফিকেট পাবেন। শুক্রবার এই ঘোষণা দেয় রাজ্যটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ জানিয়েছে, করোনা টিকা নেওয়া ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নাগরিকদের দেওয়া হবে এই সার্টিফিকেট। সঙ্গে থাকবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ বার্তাও। এতে লেখা থাকবে, ‘সজাগ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।’
তবে তৃতীয় পর্যায়ের টিকা চলার সময় ৪৫ বছরের বেশি বয়সী যারা টিকা নেবেন তাদেরও কেন্দ্রীয় সরকারের কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমে মোদির সার্টিফিকেটের পাশাপাশি মমতার ছবি সম্বলিত সনদপত্র দেবে রাজ্য সরকার।
শুক্রবার কোভিড কমিটির বৈঠক শেষে কলকাতা সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রশাসক ও পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যেহেতু ১৮ থেকে ৪৪ পর্যন্ত বয়সীদের টিকা দিচ্ছে না, রাজ্য সরকার নিজের টাকায় কিনে দিচ্ছে; তাই তাদের করোনা টিকার সনদে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ও বার্তা থাকবে। এছাড়া এই সার্টিফিকেটে কোভিশিল্ড টিকার ব্যাচ নম্বর, কো-উইন অ্যাপের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও কবে, কোথায় কোন সংস্থা টিকা দিয়েছে, সবই থাকবে।’
তিনি আরও জানান, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর স্থাস্থ্য দফতর থেকে টিকা গ্রহীতার মোবাইল নাম্বারে একটি মেসেজ পাঠানো হবে। সেখানে একটি লিংক থাকবে। ওই লিংকে প্রবেশ করলেই টিকা নেওয়ার সনদপত্র ডাউনলোড করা যাবে।
উল্লেখ্য, করোনা টিকার সনদপত্রে নরেন্দ্র মোদির ছবি থাকা নিয়ে কয়েক মাস আগেই প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রচারের জন্যই মোদির ছবি টিকার সনদে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে দেশটির বিজেপি বিরোধী শিবির। যদিও পশ্চিমবঙ্গসহ যেসব রাজ্যে বিধানসভা ভোট ছিল সেখানে টিকাগ্রহীতাদের সনদপত্র থেকে মোদির ছবি সরিয়ে নেওয়া হয়। ভোটের পর সেসব সনদে ফের যুক্ত হয় মোদির ছবি।
টিকার সনদে মোদির ছবির তীব্র সমালোচক ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এখন কেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি টিকার সনদে যুক্ত করা হচ্ছে? ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘১৮-৪৪ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার জন্য ভ্যাকসিন কিনছে রাজ্য। সেই খাতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তাহলে সেই টিকার সনদে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিলে আপত্তির কারণ কী।’