কাশির সিরাপ পান করে অনেক মানুষ মারা গেছেন অথবা অসুস্থ হয়ে ভুগছেন। এ অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ডজনখানেক পরিবার সংশ্লিষ্ট ওষুধ কোম্পানি এবং সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তারা বলেছে, কাশির ভেজাল বা দূষিত সিরাপ সরবরাহ দিয়েছে তারা। মামলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক এজেন্সি এবং সাতটি কোম্পানিকে টার্গেট করা হয়েছে। এন্টিফ্রিজ তৈরিতে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হয় এমন দুটি রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত সিরাপ বিক্রির অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ভারতে তৈরি চারটি সিরাপে এসব ক্ষতিকর উপাদান পেয়েছে তারা। তবে কোন কোম্পানির ওষুধ সেগুলো তা জানা যায়নি। এ খবর দিয়েছে চ্যানেল নিউজ এশিয়া অনলাইন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে আগস্ট থেকে কিডনির মারাত্মক অসুস্থতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কমপক্ষে ১৯৯ জন মানুষ মারা গেছেন। এর বেশির ভাগই শিশু।
এর ফলে সেখানে তদন্ত শুরু হয়। কিছু তরল ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়। মৃত ও আক্রান্তদের আত্মীয়দের পক্ষে আইনি লড়াই করছেন আওয়ান পুরিয়াদি। তিনি বলেছেন, তারা এ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ, ক্ষতিকর ওষুধ বিক্রি বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এসব ওষুধ বিক্রির জন্য সংশ্লিষ্ট শিশুমৃত্যু ও আক্রান্ত হওয়া প্রতিরোধেও কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।
১৮ই নভেম্বর করা মামলায় বলা হয়েছে, এসব বিষয়ে কেউই দায়িত্ব নেয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা খুবই হতাশ। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, আমরা চাই ওষুধ সরবরাহকারী, ফার্মাসিগুলো, বিপিওএম (খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক সংস্থা) এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এর সব দায় বহন করতে হবে। বিষাক্ত ওষুধ পান করে মারা যাওয়া প্রতিজনের বিপরীতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ২০০ কোটি রুপাইয়া (এক লাখ ২৭ হাজার ৪৯ ডলার) ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি জনের বিপরীতে দাবি করা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি রুপাইয়া (৬৩ হাজার ৫২৪ ডলার)।
ওই আইনজীবী আরও বলেন, মোট ১২টি পরিবারের পক্ষে এই মামলা করেছে দুটি পরিবার। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে অন্য পরিবারগুলোও। এরই মধ্যে পুলিশ কমপক্ষে তিনটি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। এসব কোম্পানির সিরাপ তৈরির লাইসেন্স অস্থায়ী ভিত্তিতে বাতিল করা হয়েছে।
অক্টোবরে একই ঘটনায় পশ্চিম আফ্রিকার গাম্বিয়ায় মারা যায় ৭০টি শিশু। ধারণা করা হয়, এসব শিশু আমদানি করা ওই সিরাপ পানে মারা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তারা ভারতে চারটি তৈরি চারটি কাশির সিরাপে অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় ডাইইথাইলিন গ্লিকোল এবং ইথাইলিন গ্লাইকোলের সন্ধান পেয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে যে, এই সিরাপে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।