ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে চীনের সামরিক সম্প্রসারণ ও হুমকি-ধমকি থেকে মুক্ত রাখতে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর করার অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে কোয়াড বৈঠকে চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ অঙ্গীকার করেন। এ ছাড়া মানবিক সহায়তা, সন্ত্রাসবাদ, সাইবার ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক সরবরাহে শৃঙ্খলাসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায়ও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা। খবর রয়টার্সের
কোয়াড হলো যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত—এই চার দেশের অনানুষ্ঠানিক জোট। দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজিত এ বৈঠকে যোগ দেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান উত্তেজনার বিষয়টিও এবারের পরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠকের একটি আলোচ্য বিষয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মনে করেন, ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েনের ঘটনাটি আন্তর্জাতিক নীতিভিত্তিক শৃঙ্খলার জন্য এক চ্যালেঞ্জ। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নীতিভিত্তিক এ শৃঙ্খলার সুরক্ষায় কোয়াড কাজ করবে। সব দেশের জন্য নিজেদের পছন্দমতো চলার অধিকার নিশ্চিত করা, হুমকি-ধমকি থেকে তাদের মুক্ত রাখা এবং সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর মতো বিষয়গুলো এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আর তা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, ইউরোপ কিংবা পৃথিবীর অন্য কোনো জায়গাই হোক না কেন।
বাইডেন প্রশাসন বিশ্বকে দেখাতে চায়, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে গুরুত্ব দেওয়ার দীর্ঘদিনের কৌশলটি এখনো বজায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের একাংশে পররাষ্ট্র নীতিমালা–সংক্রান্ত বড় ধরনের সংকট থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারের জায়গাগুলোকে বিচ্যুত করা যাবে না।
আজ সাংবাদিকেরা ব্লিঙ্কেনের কাছে জানতে চান, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের সঙ্গে সংঘাত অনিবার্য কি না। জবাবে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘কোনো কিছুই অনিবার্য নয়।’
ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, ‘চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের ভেতরে ও আঞ্চলিকভাবে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক আচরণ করছে। আমি মনে করি, এ ব্যাপারে আমরা নিজেদের উদ্বেগগুলো প্রকাশ করেছি।’
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস পেইন বলেন, আঞ্চলিক পর্যায়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখার ওপর সবচেয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা, অবকাঠামো, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পদক্ষেপ এবং দুর্যোগ–পরবর্তী ত্রাণব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগামী মে মাসে জাপানে অনুষ্ঠেয় কোয়াড শীর্ষ নেতাদের সম্মেলনের আগে জোটটির নতুন কোনো অঙ্গীকার ঘোষণা করার সম্ভাবনা নেই। মে মাসের ওই সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও অংশ নেবেন।