খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দেশটির ওপরেই। একই অবস্থা লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রেও। জাতিসংঘের সূচকে সেখানেও এগিয়ে বাংলাদেশ, পিছিয়ে ভারত। অবশ্য দক্ষিণ এশিয়ার অন্য তিন প্রতিবেশী দেশও পেছনে ফেলেছে নয়া দিল্লিকে।
জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে চলতি বছর বিশ্বের ১৯৩টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ১১৭-তে। গত বছর যা ছিল ১১৫। তবে প্রতিবেশী বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছে ভারতকে। এমনকি শ্রীলংকা, ভুটান ও নেপালের মতো তথাকথিত ছোট অর্থনীতির দেশও রয়েছে ভারতের আগে।
২০১৫ সালে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা (এসডিজি) হাতে নেয়। এর লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ লক্ষ্যে দেশগুলোকে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিতেও বলা হয় জাতিসংঘের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে দারিদ্র্যতা দূরীকরণ, সকলের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, সুস্বাস্থ্য, উন্নত শিক্ষা, লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধ অন্যতম।
জাতিসংঘের সেই এসডিজি’র সূচকে ভারত গত বছরের তুলনায় খারাপ ফলে করে দুই ধাপ নিচে নামল ৷ যা বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, ভুটান ও নেপালের থেকেও খারাপ। সূচকে ভারতের সর্বমোট স্কোর একশোর মধ্যে ৬১ দশমিক ৯। নাগরিকদের সবার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়া এবং লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে না পারার কারণে ভারতের এই অবনতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে এনভাইরনমেন্টাল পারফরমেন্স ইন্ডেক্স বা ইপিআই সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৬৮তম। ইপিআই’র ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয় দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের স্বাস্থ্য, আবহাওয়া, বায়ু দূষণ, পরিচ্ছন্নতা, খাবার পানীয়, বসবাসের সুযোগ-সুবিধা ও জীববৈচিত্র।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বার বার দেশটির উন্নয়নের দাবি করা হলেও তাদের সেই আস্ফালন আর পরিসংখ্যান স্ব-বিরোধী তথ্য দিচ্ছে। তথ্য বলছে, জনস্বাস্থ্য থেকে সর্বজনীন শিক্ষা, শিশুদের অপুষ্টি দূরীকরণ বা বেকারত্ব— অর্থনীতি-কর্মসংস্থানের মতো এই সব গুরুত্বপূর্ণ সূচকে ক্রমেই প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় নিচে নামছে ভারত।
প্রতিবেশী বাংলাদেশ তো বটেই, শ্রীলংকা, ভুটান, নেপালের মতো তথাকথিত ছোট অর্থনীতির দেশও গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ভারতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে। আর এই পরিসংখ্যানেই উদ্বিগ্ন দেশটির অর্থনীতিবিদরা।