রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথভাবে করোনার টিকা উৎপাদনের খবর চাউর হলেও আদতে কো-প্রোডাকশন বা যৌথ উৎপাদনে আগ্রহী নয় রাশিয়া। যৌথ উৎপাদনে বিনিয়োগ অন্যতম প্রধান শর্ত। কিন্তু মস্কো টিকা উৎপাদন খাতে ঢাকায় কোনো বিনিয়োগে এখনো রাজি হচ্ছে না বরং আন্তর্জাতিক মার্কেটে খ্যাতি রয়েছে বাংলাদেশের এমন একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে চায় তারা। নির্ধারিত ওই কোম্পানীর কাছে তারা ফর্মুলা হস্তান্তর করবে, তাদের টিকা উৎপাদনের লাইসেন্স দিবে। বিনিময়ে নিয়মিতভাবে রাশিয়াকে ওই কোম্পানির উৎপাদন-রয়্যালিটি পরিশোধ করতে হবে। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রমতে, ঢাকার যে কোম্পানি রাশিয়ার টিকা উৎপাদনের এজেন্সি গ্রহণ করবে যন্ত্রপাতি কেনা থেকে শুরু করে সব কিছুই ওই কোম্পানিকেই সংগ্রহ করতে হবে। তবে বাংলাদেশে রাশিয়ার টিকা উৎপাদনের বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে জানিয়ে কূটনৈতিক সূত্র এটা নিশ্চিত করেছে যে, উৎপাদনের বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তি বা খসড়া আদান-প্রদানের অবস্থাতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
স্মরণ করা যায়, একদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন খোলাসা করেই বলেছেন, বিশ্বে রাশিয়াই একমাত্র দেশ, যে বিভিন্ন দেশকে করোনা-টিকার প্রযুক্তি স্থানান্তরে প্রস্তুত। তারা বিদেশে উৎপাদন প্রসারিত করতে চায়।
শনিবার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার সম্পাদকদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি আলোচনাকালে পুতিন তার সরকারের ওই প্রস্তুতির কথা জানান।
জি টু জিতে কিনতে হবে রাশিয়ার টিকা : এদিকে রাশিয়া থেকে প্রায় এক কোটি টিকা কেনার পরিকল্পনার প্রথম ধাপ প্রায় চূড়ান্ত। অর্থাৎ দেশব্যাপী চলমান টিকা কার্যক্রমে স্থবিরতা কাটতে দ্রুত রাশিয়া থেকে ৫০ লাখ স্পুটনিক-ভি টিকা কেনার প্রস্তুতি বেশদূর এগিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একদিন আগেই জানিয়েছে ওই টিকা আমদানি, পরিবহন এবং মজুত কীভাবে হবে- তা ঠিক করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দিয়েছেন সরকারের নীতি-নির্ধারকরা।
কূটনৈতিক সূত্র গতকাল মানবজমিনকে আরও জানিয়েছে- রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের যে আলোচনা হয়েছে তাতে জি টু জি ভিত্তিতেই টিকা বিক্রি করছে মস্কো। যদিও ঢাকার অনেক কোম্পানি আগে থেকে রাশিয়ার টিকা কেনার জন্য লবিং করছে। তারা এ নিয়ে রাশিয়ান কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে। কিন্তু রাশিয়া এতে রাজি হচ্ছে না বরং মস্কো সরকারিভাবেই টিকা বিক্রি করতে চায়।
উল্লেখ্য, বেশ ক’দিন আগে টিকা বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে নন-ডিসক্লোজার সই হয়েছে। তাতে টিকার দাম এবং অন্যান্য বিষয়াদি বাংলাদেশকে গোপন রাখার শর্ত দেয়া হয়েছে।