কে ব্যারি শার্পলেস
দুইবার নোবেলজয়ী কে ব্যারি শার্পলেসকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্সের’ (আইএসিএস) সাবেক অধিকর্তা শান্তনু ভট্টাচার্য। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে’ (এমআইটি) শার্পলেসের গবেষণায় সহযোগী ছিলেন তিনি। সেই সুবাদেই যুক্তরাষ্ট্রের এই কৃতী রসায়নবিদকে খুব কাজ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
বুধবার (৫ অক্টোবর) বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের ‘সিনিয়র প্রফেসর’ শান্তনু বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত এমআইটিতে আর এক নোবেলজয়ী জীবরসায়নবিদ ভারতীয় বংশোদ্ভূত হরগোবিন্দ খোরানার তত্ত্বাবধানের গবেষণার কাজ করেছিলেন তিনি। শার্পলেসও সে সময় ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানে। গবেষণা সংক্রান্ত কাজের কারণে শার্পলেসকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। দেখেছিলেন, ল্যাবরেটরিতে কাজের পাশাপাশি সাঁতার এবং র্যাফটিংয়েও অদম্য উৎসাহী ওই বিজ্ঞানী। এমনকি, পরবর্তী সময় এমআইটি ছেড়ে ক্যালিফোর্নিয়ার চলে যাওয়ার ‘কারণ’ জানাতে গিয়ে শান্তনুকে শার্পলেস বলেছিলেন, এখানে তো সমুদ্র নেই। সমুদ্রের হাওয়া না পেলে আমার ভালো লাগে না। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
শান্তনু বলেন, এমআইটিতে উনি (শার্পলেস) বারবার আমাদের বলতেন, ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময় ‘সেফটি গগলস’ পরার কথা। আসল কারণটা পরে জেনেছিলাম। সত্তরের দশকে এক বার মুহূর্তের অসতর্কতায় টেস্টটিউব ফেটে তার দুটি চোখ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিল। একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন চিরতরে। ভাগ্যিস দ্বিতীয় চোখটি বেঁচে গিয়েছিল। রসায়নে জোড়া নোবেল জয় এসেছে তো সেই এক চোখের পর্যবেক্ষণেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারোলিন আর বার্তোজ্জি ও ডেনমার্কের মর্টেন মেলডালের পাশাপাশি ২০২২ সালের রসায়নে নোবেলজয়ী হিসাবে বুধবারই শার্পলেসের নাম ঘোষণা করেছে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। এর আগে ২০০১ সালেও রসায়নেই নোবেল পেয়েছিলেন শার্পলেশ। ১৯০১ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে রসায়নে এই নিয়ে মোট ১১৬ জন রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের মধ্যে মাত্র দুজন দুইবার করে রসায়নে এই সম্মাননা পেলেন। ১৯৫৮ সাল ও ১৯৮০ সালে রসায়নে দুইবার নোবেল সম্মাননা পাওয়ার রেকর্ড ছিল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক স্যাঙ্কারের। এবার সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন শার্পলেস।