ছবি: সংগৃহীত
প্রথমবারে মত যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা নিয়ন্ত্রিত নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে গবেষণাগারে শক্তি উৎপাদনে সাফল্য পেয়েছেন। সূর্যের মত নক্ষত্রে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমেই শক্তি তৈরি হয়।
ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স লাইভমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির ন্যাশনাল ইগনিশন ফ্যাসিলিটিতে বিজ্ঞানীরা সফলভাবে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন, যেখানে ব্যবহার করা জ্বালানির চেয়ে বেশি মাত্রায় শক্তি তৈরি সম্ভব হয়েছে। খবর সিএনএনের।
বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরে পৃথিবীতে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় সেই বিক্রিয়া ঘটানোর কৌশল উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। প্রকৃতপক্ষেই যদি পৃথিবীতে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে নিউক্লিয়ার ফিউশন ঘটানো যায়, তবে পরিবেশবান্ধব উপায়ে দৃশ্যত অসীম পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করা যাবে। এ প্রক্রিয়ায় কার্বন নির্গামন বা তিজস্ক্রিয় নিঃসরণের ঝুঁকিও তেমন বাড়বে না।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা জয়েন্ট ইউরোপিয়ান টোরাস (জেইটি) ল্যাবরেটরির গবেষকরা এ বছর ফেব্রুয়ারিতে হাইড্রোজেনের দুটি আইসোটপ ব্যবহার করে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে তাপ উৎপাদনের নতুন রেকর্ড গড়ার খবর দেন।
জেইটি ল্যাবের গবেষকরা তাদের গবেষণায় ৫ সেকেন্ডে ৫৯ মেগাজুল (১১ মেগাওয়াট) শক্তি তৈরি করতে পেরেছিলেন, যা ১৯৯৭ সালে তাদের একই ধরনের গবেষণায় উৎপাদিত শক্তির দ্বিগুণেরও বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা যে প্রক্রিয়ায় কাজটি করেছেন, তাকে বলা হয় থার্মোনিউক্লিয়ার ইনারশিয়াল ফিউশন। তারা লেজারের মাধ্যমে নিউট্রনের গায়ে আইসোটপ ছুড়ে দিয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন, যার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে তাপ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে কাজটি তারা করেছেন, সেটি গবেষণাগারে যন্ত্রের মধ্যে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অতি ক্ষুদ্র একটি নক্ষত্রের জন্ম দেওয়ার মত। এখন সেই ফিউশন বিক্রিয়া ধরে রেখে আরও বড় পর্যায়ে শক্তি উৎপাদন এবং তা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগানোর কৌশল তাদের উদ্ভাবন করতে হবে।
ভবিষ্যতে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদুৎকেন্দ্র তৈরি করলে তাতে গ্রিনহাউস গাস নির্গমণ হবে না। স্বল্পস্থায়ী তিজস্ক্রিয় বর্জ্য তৈরি হলেও তার পরিমাণ হবে খুবই সামান্য।
এই শতকের দ্বিতীয় ভাগেই নিউক্লিয়ার ফিউশন একটি নির্ভরযোগ্য জ্বালানি উৎস হয়ে উঠতে পারে বলে আশা করছেন গবেষকরা।
এসএম