ডিয়েগো ম্যারাডোনার কথা বললে সবার আগে যেসব বিষয় মনে আসে, ‘হ্যান্ড অব গড’ তার অন্যতম। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রেফারির চোখ এড়িয়ে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। যে গোলের প্রসঙ্গে পরে ম্যারাডোনা নিজেই বলেছিলেন, সেটি ছিল ‘হ্যান্ড অব গড’ বা ‘ঈশ্বরের হাত’।
ঐতিহাসিক সেই গোলের বলটিকেই এবার নিলামে তোলা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নিলামে এই বলটির মূল্য ধরা হতে পারে আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড থেকে তিন মিলিয়ন পাউন্ড।
‘হ্যান্ড অব গড’ বা ঈশ্বরের হাত দিয়ে করা ম্যারাডোনার সেই গোল ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটি। ইংলিশ গোলরক্ষক পিটার শিলটনকে বোকা বানিয়ে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।
এই গোলের পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কও আছে অনেক। ম্যারাডোনা নিজে এই গোলকে ফকল্যান্ড যুদ্ধের ‘প্রতীকী প্রতিশোধ’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। আবার ইংলিশদের বেশির ভাগই এই গোলকে ‘জোচ্চুরি’ বলে উল্লেখ করে থাকেন। তবে সব তর্ক-বিতর্কের পরও ম্যারাডোনার গোলটি ফুটবলে বিশেষ মর্যাদা পেয়ে থাকে। আর তাই গোলটির বল নিয়ে যে মানুষের আগ্রহ থাকবে, তা স্বাভাবিক ব্যাপারই বটে।
ম্যারাডোনার ঐতিহাসিক সেই গোলের বলটি এখন সংরক্ষিত আছে ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারি আলী বিন নাসেরের কাছে। হ্যান্ডবলে গোল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিউনিসিয়ান এই রেফারি বলেছিলেন, বিষয়টি তিনি লক্ষ করেননি। সিদ্ধান্তের জন্য লাইন্সম্যানের ওপর নির্ভর করেছিলেন। তাঁর সিদ্ধান্তে ফুটবল–দুনিয়ায় বিতর্কের ঝড় উঠলেও ম্যাচের পর বলটি ঠিকই নিজের সংগ্রহে রেখে দেন বিন নাসের।
সেই ঘটনার ৩৬ বছর পর ফুটবলের ঐতিহাসিক স্মারক হিসেবে নিলামে উঠতে যাচ্ছে বলটি। ১৬ নভেম্বর নিলামটি পরিচালনা করবেন গ্রাহাম বাড। বলটি নিলামে তোলা নিয়ে বিন নাসের বলেছেন, ‘বলটি আন্তর্জাতিক ফুটবল ইতিহাসের অংশ। বলটিকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার এটিই সঠিক সময় বলে মনে করছি। আমি আশা করি, ক্রেতা এই বলটিকে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার ব্যবস্থা করবেন।’
অবশ্য শুধু ‘হ্যান্ড অব গড’–এর কারণেই সেই ম্যাচটি বিখ্যাত নয়। হাত দিয়ে গোল করার একটু পর একক প্রচেষ্টায় ইংল্যান্ডের পাঁচজনকে কাটিয়ে ‘শতাব্দীর সেরা গোল’ বা ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’ও করেছিলেন ম্যারাডোনা। এর আগে সেই ম্যাচের জার্সিও নিলামে ৯.৩ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিল।