পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায়। এসব এলাকার নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। বাঁধ ভেঙেছে একাধিক স্থানে। ফসলের খেত নষ্ট হয়েছে। অনেক স্থানে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। অনেক স্থানে আসা পর্যটকেরা বন্যায় আটকে পড়েছেন।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর মধ্যে আলিপুরদুয়ার ভুটান লাগোয়া জেলা। ভুটানে প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় সেখানের নদ–নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ এলাকা। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড়েও ধস নেমেছে।
আলিপুরদুয়ার পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। এখানের বক্সা পাহাড়ে ঘুরতে এসে বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন। গতকাল এসব পর্যটককে পাহাড় থেকে নামিয়ে সমতলের বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়ে তৈরি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে আলিপুরদুয়ারের একটি নদী বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ায় বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এখানের জয়ন্তী এলাকার ভুটিয়াদের একটি বস্তি প্লাবিত হয়েছে। রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ববি লামা বলেন, বৃষ্টি আরও বাড়লে গোটা জনপদই জলের নিচে ডুবে যাবে।
এখানের জয়ন্তী এলাকার পর্যটনের গেস্টহাউস থেকে পর্যটকদের উদ্ধার করে আলীপুরদুয়ারে নিয়ে আসা হয়েছে। আলীপুরদুয়ার শহরের পাশ থেকে বয়ে চলা কালজানি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এর ফলে পাশের বহু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ভুটানের আবহাওয়া দপ্তরও জানিয়েছে, সেখানে আরও ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাই আলীপুরদুয়ারের তিন হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে আলিপুরদুয়ার শহরের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে। প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, এখন যেন কেউ বক্সা পাহাড়ে ভ্রমণে না যান।
অন্যদিকে কোচবিহারের নিম্নাঞ্চল ইতিমধ্যে ডুবে গেছে। ডুবে গেছে বহু ফসলের খেত। বহু বাড়িতে ঢুকেছে বন্যার জল। এখানের রায়ডাক নদীর পানি বেড়ে ঢুকে পড়েছে বহু বাড়িতে। ডুবে গেছে তিন শতাধিক বসতবাড়ি। আর বন্যার্তদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য এখানের বিভিন্ন সরকারি স্কুলে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। ওই সব আশ্রয়কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে শুকনো খাবার।
এদিকে গতকাল কোচবিহারের বক্সিরহাটে রায়ডাক নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধ ভেঙে মহিষকুচি গ্রামকে তলিয়ে দিয়েছে।
বন্যা দেখা দিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এখানের তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা ধীরে ধীরে ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। এখানেও সিকিমের পাহাড় থেকে পানি নামছে তিস্তা নদীতে। তিস্তা নদীরও পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে জলপাইগুড়ির নিম্নাঞ্চল।