সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন না আনা এবং বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন ও ত্রুটিপূর্ণ পানি ব্যবস্থাপনার ফলে পাকিস্তানে বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘন ঘন ঘটছে।
জাস্ট আর্থ নিউজের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, চলতি বছরে দক্ষিণ-এশিয়ার এই দেশটিতে বন্যা দেশ জুড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। আর এই বিপর্যয়ে দেশটির বিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দীর্ঘদিনের চরিত্রটি সামনে নিয় আসে। কারণ দেশটি বিপর্যয়ের সময় পদক্ষেপ নিতে দেরি করে। এছাড়া পানি সম্পদের ত্রুটিপূর্ণ ব্যবহারের দিকটিও সামনে নিয়ে আসে।
পাকিস্তানের পানির মানের ওপর শিল্প ও কৃষি বর্জ্য দূষণ উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। উপরন্তু, পর্যাপ্ত পানি রিচার্জিং (বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে ভূগর্ভে পাঠানো) ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছাড়া ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত উত্তোলন পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করেছে।
দেশটিতে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম জলাশয় থাকা সত্ত্বেও মিঠা পানির উৎসসহ প্রাকৃতিক সম্পদ ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। পাকিস্তানের তিনটি মেগা-বাঁধে যে পরিমাণ ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ হয়, সিন্ধু অববাহিকায় তার ৮০ গুণ বেশি ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষিত হয়। দেশের আবাদযোগ্য ভূমির ৮০ শতাংশের বেশি ভূমিতে সিন্ধুর পানি ব্যবহার করা হয়।
ওই বাঁধের দিকে পানির প্রবাহ তৈরি করতে সিন্ধুর অববাহিকা জুড়ে নির্মিত বিশাল কাঠামোই এই নদী দূষণের প্রধান কারণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান শিল্পের জন্য পানির চাহিদা বেড়েছে। জাস্ট আর্থ নিউজের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সংবেদনশীল শীর্ষ দশটি দেশের তালিকায় এখন পাকিস্তানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
পাকিস্তানের পানি সম্পদের ৯০ শতাংশের বেশি কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয় যা প্রয়োজনের তুলনায় অপচয় এবং অদরকারি। প্রচুর পানি প্রয়োজন— যেমন ধান ও আখের মতো ফসলের ওপর দেশটি নির্ভরশীল হয়ে আছে।