পাকিস্তানে নারী অধিকার বিষয়ে সচেতনা সৃষ্টিতে যে ‘অওরাত মার্চ’ আয়োজন করা হয় তার আয়োজকদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা দিয়েছে পুলিশ। দেশটিতে মূলত সংখ্যালঘু ও প্রগতিশীলদের কণ্ঠরোধ করতে ব্লাসফেমি বা ধর্মনিন্দার আইন ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এবারো একটি ভিডিও এডিট বা স¤পয়াদনা করে নারীবাদী এই সংগঠনটিকে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে সেখানে।
আল-জাজিরার খবরে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশওয়ারে ওই মামলা দায়ের করে পুলিশ। পাকিস্তানে ধর্মনিন্দার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ-। তবে যে অভিযোগে এই মামলা দায়ের হয়েছে তাকে ভিত্তিহীন এবং ভুয়া বলে জানিয়েছেন অওরাত মার্চের আয়োজকরা। এ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তারা। এতে বলা হয়েছে, নারী দিবসের পর থেকে সমাবেশে অংশ নেয়া মেয়ে ও নারীদের অসংখ্যবার হত্যার হুমকি দিয়েছে মৌলবাদীরা।
দেয়া হয়েছে ধর্ষণের হুমকিও। একইসঙ্গে প্রগতিশীল এই নারীদেরকে আজেবাজে ভাষায় গালাগালিও করা হচ্ছে। এরপরও কাবু না হওয়ায় এখন মিথ্যা ধর্মনিন্দার মামলা দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে মূলত শত শত নারীদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে।
কট্টোর রক্ষণশীল পাকিস্তানে ধর্মনিন্দা একটি পর্শকাতর বিষয়। তাই প্রায়ই দেখা যায় শত্রুকে কাবু করতে এর ব্যবহার করা হচ্ছে। এ বছর যে ভিডিওর ভিত্তিতে ধর্মনিন্দার অভিযোগ আনা হয়েছিল সেটিও হচ্ছে সফটওয়্যার ব্যবহার করে এডিট করা। নতুন করে তৈরি করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে নারীবাদী অধিকারকর্মীরা ইসলামবিরোধী শ্লোগান দিচ্ছে। তবে ওই দলটি পরে আসল ভিডিও এবং এডিট করা ভিডিও পাশাপাশি বসিয়ে প্রমাণ করে যে তাদেরকে ফাঁসাতেই এই ভিডিও এডিট করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নারীদেরকে এমন অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে যা কখনোই হয়নি। এগুলো করা হয় মূলত ইসলামপন্থী উগ্রবাদীদের রক্তক্ষুধা মেটানোর জন্য।
পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ধরেই উগ্রবাদের ক্রমশ উত্থান হয়েছে। মৌলবাদীদের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস হয়ে গেছে দেশটির অর্থনীতি। সম্প্রতি দেশটির ইসলামপন্থী দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক দেশজুড়ে সহিংস আন্দোলন চালিয়েছে। এরপরই দেশটির ইমরান খানের সরকার উগ্রবাদীদের লাগাম টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরইমধ্যে তেহরিক-ই-লাব্বাইকের প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে দলটিকেও।