পাকিস্তান সংসদ পুনবর্হালের রায় সুপ্রিম কোর্টের, অনাস্থা ভোট শনিবার
আন্তর্জাতিক

পাকিস্তান সংসদ পুনবর্হালের রায় সুপ্রিম কোর্টের, অনাস্থা ভোট শনিবার

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়াল। ছবি: ভোরের কাগজ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ার বিরুদ্ধে সর্বসম্মতিক্রমে রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। সংসদ পুনর্বহালের পাশাপাশি শনিবার সংসদে ফের ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটিরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) এ রায় দিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। দিনভর নাটকীয়তা শেসে স্থানীয় সময় সাড়ে সাতটায় রায় ঘোষণার কথা থাকলেও তা এক ঘন্টা বিলম্বে ঘোষিত হয়।

গত ৩ এপ্রিল পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি তা বাতিল করে দেন। ডেপুটি স্পিকারের দেয়া ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা।

এর আগে মামলটির শুনানি চলাকালে দেশটির প্রধানবিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল মন্তব্য করেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।

প্রধানবিচারপতি শুনানিকালে আরও বলেন, এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে এর পর কী করা উচিত। এখন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল (এজিপি) খালিদ জওয়াদ খান পরামর্শ দেবেন আদালত কোনো প্রক্রিয়ায় সামনে এগোবে। তবে প্রধান বিচারপতি সব দলের উদ্দেশে বলেন, আমাদের উচিত জাতীয় স্বার্থের দিকে লক্ষ্য রাখা।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্ডিয়ালের নেতৃত্বে বিচারপতিদের পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চে চতুর্থ দিনের মতো মামলাটির শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি পাশাপাশি এই বেঞ্চে আর যে বিচারপতিরা আছেন তারা হলেন- ইজাজুল আহসান, মোহাম্মদ আলী মাজহার, মুনিব আখতার ও জামাল খান মান্দোখেল।

এদিন সকালে বিচারপতি আখতার ও বিচারপতি মান্দোখেল সুয়ো মোটো মামলাটির শুনানি শুরু করেন।

শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জামাল খান মান্দোখেল জানতে চান, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনীত অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের রায়ে ডেপুটি স্পিকারে স্বাক্ষর নেই কেন? রায় দিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার কিন্তু স্বাক্ষর দেয়া স্পিকারের। এ ছাড়া ওইদিন সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন এই বিচারপতি।

বিচারপতি জামাল খান মান্দোখেল আরও প্রশ্ন করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কি উপস্থিত থাকা উচিত ছিল না? তার প্রশ্নের উত্তরে সরকারি আইনজীবী স্বীকার করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংসদে থাকা উচিত ছিল।

আগের দিন বুধবার শুনানিপর্বে পাক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির আইনজীবী আলী জাফর অনাস্থা ভোটের আগেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভাঙার দায় তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের কাঁধে চাপিয়েছেন। সেদিন বিচারপতি জামাল খান মান্দোখেল জানতে চান, কেন প্রেসিডেন্ট জাতীয় পরিষদ ভাঙার কারণ জানতে চাইলেন না প্রধানমন্ত্রীর কাছে? জবাবে জাফর বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ মানা প্রেসিডেন্টের কাছে বাধ্যতামূলক।

এর আগে পাকিস্তান পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির জরুরি বৈঠকের অজুহাত দিয়ে জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক এড়িয়েছিলেন ইমরান। সরকারের প্রস্তাব মেনে গত ৩ এপ্রিল ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সংসদ মুলতবি ঘোষণা করেছিলেন। এরপর সুপ্রিম কোর্ট গত ৬ এপ্রিল জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির সেই বৈঠকের বিবরণলিপি তলব করে সরকারের কাছে।

গত ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী জোটের তরফে পেশ হওয়া অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় পরিষদে ভোটাভুটির কথা থাকলেও ডেপুটি স্পিকার সুরি তা খারিজ করে দেন। তার যুক্তি ছিল, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব আসলে সংবিধান-বিরোধী এবং তা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই এ নিয়ে কোনও ভোটাভুটি হতে দিতে পারবেন না তিনি। এর পরেই ইমরানের সুপারিশে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আলভি। তার প্রতিবাদে রাতেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা নেতৃত্ব। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে গত ৪ এপ্রিল থেকে শুনানি শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট।

Source link

Related posts

ইসরায়েল ইস্যুতে হামাস প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

News Desk

ট্রাম্পের ফেসবুক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসছে বুধবার

News Desk

ভারতীয়দের ইউক্রেন ছাড়ার পরামর্শ

News Desk

Leave a Comment