Image default
আন্তর্জাতিক

পুতিনকে সতর্কবার্তা বাইডেনের

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সতর্কবার্তা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, রাশিয়া কোনো ‘ক্ষতিকর কার্যক্রমের’ সঙ্গে যুক্ত থাকলে তা ‘শক্ত ও তাৎপর্যপূর্ণ’ উপায়ে তা প্রতিহত করবে যুক্তরাষ্ট্র।

ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনকালীন মেয়াদে ইউরোপের মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা নিরসনে ইউরোপে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছেন জো বাইডেন। মঙ্গলবার এই উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেছেন তিনি।

ওয়াশিংটন থেকে উড়োজাহাজে ওঠার পর তিনি প্রথমে পৌঁছান ব্রিটেনে। দেশটির সাফোক জেলায় যুক্তরাষ্ট্রের আরএএফ মাইল্ডেনহল বিমানঘাঁটিতে মার্কিন সেনাবাহিনী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং একটি সংক্ষিপ্ত ভাষণও দেন।

ভাষণে পুতিনকে উদ্দেশ্য করে বাইডেন বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চাই না; বরং আমরা চাই দেশটির সঙ্গে একটি স্থিতিশীল ও আস্থাপূর্ণ সম্পর্ক কিন্তু একটি ব্যাপার আমি শুরুতেই স্পষ্ট করতে চাই, আর তা হলো- রাশিয়ার সরকার যদি কোনো প্রকার ক্ষতিকর কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকে, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তা শক্ত হাতে এবং তাৎপর্যপূর্ণ উপায়ে তা প্রতিহত করবে।

বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সময়ে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার পেছনে রাশিয়ার কারসাজি ছিল- এমন অভিযোগ বরাবরই করে আসছিল দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক পার্টি। তবে ক্রেমলিন বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে।

গত ২০ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর জো বাইডেন প্রকাশ্যেই ফের সেই পুরনো অভিযোগ তোলেন এবং সেবারও তা অস্বীকার করে ক্রেমলিন।

দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বি দেশের রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও দানা বাঁধে গত মার্চে। মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসি নিউজে এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জো বাইডেন বলেন, তিনি ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘খুনী’ মনে করেন এবং ২০১৬ সালের নির্বাচনে পুতিন হস্তক্ষেপের অভিযোগ ফের উত্থাপন করে হুঁশিয়ার করেন, এজন্য রাশিয়াকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যে চরম ক্ষিপ্ত হয় ক্রেমলিন। রাশিয়ার এক টেলিভিশন চ্যানেলে বাইডেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রেসিডেন্ট নিজেরা যেমন, অন্যদেরও তেমনই মনে করেন।

এদিকে ‍পুতিনের সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনির কারাবাসকে কেন্দ্র করে ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে রাশিয়ার। ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৩ এপ্রিল ইউরোপের সমালোচনা করে বলেছেন, শেয়ালে দল যেমন বাঘের তাঁবেদারি করে, ইউরোপের দেশগুলোও তেমনি যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে ব্যস্ত।

বাইডেনের সাতদিনের সফরে অবশ্য পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা আছে। সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভাতে হবে এই বৈঠক। হোয়াইট হাইসের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি, সাইবার হামলা বা হ্যাকিং এবং কারবন্দি অ্যালেক্সেই নাভালনির ব্যাপারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

দেশের প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হওয়ার পর এটি জো বাইডেনের প্রথম বিদেশ সফর। যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি হিসেবে জিল বাইডেনও এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যাচ্ছেন।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছে ৭ দিনের এই সফরে প্রথমে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বাইডেন। ‘আটলান্টা চার্টার’ সম্পর্কে আলোচনা করবেন তারা।

পাশাপাশি জি ৭ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ও ন্যাটো সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বাইডেন। এছাড়া উইন্ডসর প্রসাদে ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সূচি আছে জো ও তার স্ত্রী জিল বাইডেনের।

Related posts

মুখ ঢাকলে ১০০০ ডলার জরিমানা সুইজারল্যান্ডে

News Desk

আমিরাতের জন্য দ্বার খুলছে ১৯ দেশ

News Desk

হাইপারসনিক অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

News Desk

Leave a Comment