ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে এবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই প্রথম পুতিনের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করলেন। বাইডেন বৃহস্পতিবার বলেন, রুশ নেতা সত্যিকার অর্থে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চাইলে তিনি কথা বলতে প্রস্তুত আছেন। খবর এএফপি ও আলজাজিরা অনলাইনের।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফর চলাকালে তার সঙ্গে কথা বলার সময় বাইডেন এই ইচ্ছা পোষণ করেন। এ সময় মাক্রোঁ বলেন, তার ওয়াশিংটন সফরের পর তিনি আবারও পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন। মাক্রোঁর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা খোলা রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি পুতিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রস্তুত। যদি সত্যিকার অর্থে তার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ্রহ থাকে যে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার উপায় খুঁজছেন, তবে তিনি এখনো তা করেননি। বাইডেন বলেন, ‘যদি তা হয়, আমার ফরাসি এবং ন্যাটো বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে পুতিনের মনে কী আছে তা দেখতে আমি তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারলে খুশি হব। তিনি এখনো এটি করেননি। আলোচনার শেষপর্যায়ে বাইডেন ও ম্যাক্রোঁ উভয়ই আক্রমণকারী রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে দীর্ঘ মেয়াদি সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন। বাইডেন বলেন, ‘এই যুদ্ধ অবসানের একটি উপায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই পুতিন ইউক্রেন থেকে তাদের সকল সৈন্য সরিয়ে নেবেন। কিন্তু তিনি তা করবেন বলে মনে হয় না। এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকে দেশটির সর্বোচ্চ ১৩ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির এক সিনিয়র সহকারী বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন। মিখাইলো পদলইয়াক বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ‘জেনারেল স্টাফ থেকে আমরা সরকারিভাবে যে ধারণা পেয়েছি, তাতে এ যুদ্ধে ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ‘যথা সময়ে’ এ সংক্রান্ত সরকারি তথ্য প্রকাশ করবেন। গত জুনে ইউক্রেনের একেবারে পূর্বের লুগানস্ক অঞ্চলের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে রুশ বাহিনীর লড়াইয়ের সময় জেলেনেস্কি বলেন, কিয়েভ প্রতিদিনের লড়াইয়ে ৬০ থেকে ১০০ সৈন্য হারাচ্ছে এবং এ যুদ্ধে প্রায় ৫০০ জন আহত হয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেন, প্রায় সাত মাসের ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ৫,৯৩৭ সৈন্য নিহত হয়েছেন। সৈন্যদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে উভয় পক্ষ তাদের নিহতের সংখ্যা কম করে দেখাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ জেনারেল মার্ক মিলি গত মাসে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার এক লাখেরও বেশি সৈন্য নিহত বা আহত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইউক্রেনের বাহিনীও একই ধরনের ক্ষতির শিকার হয়েছে। তবে এ সংখ্যা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ এ যুদ্ধে ইউক্রেনের হাজারো বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।
previous post