রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গত তিন মাসে চতুর্থবারের মতো বৈঠক করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় দেখা করেছেন তাঁরা। এ সময় রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন এরদোয়ান। খবর এএফপি ও বিবিসির।
ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর মস্কোর ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা। এসব নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে একমত হতে আঙ্কারার ওপর চাপ দিয়ে আসছে তারা। তবে সে পথে না হেঁটে বরং রাশিয়া–ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ভূমিকা পালনের প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি।
সম্প্রতি মস্কো ও আঙ্কারার মধ্যেও বেশ কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। এতে বিগত কয়েক মাসে তুরস্ক থেকে রাশিয়ার বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। আজকের বৈঠকেও বাণিজ্যের বিষয়টি উঠে আসে। এ সময় এরদোয়ান তুরস্কের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কথা বলেন। রাশিয়ার তৈরি এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আগামী বছরে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এরদোয়ান ও পুতিনের মধ্যে এ সাক্ষাৎ হয়েছে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে (সিআইসিএ)। এ সময় পুতিনকে তুরস্কের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে জানান এরদোয়ান। আঙ্কারার পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তুরস্কের উত্তরাঞ্চলে তৈরি করে দেবে রাশিয়া। এ সময় রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস অন্যান্য দেশে সরবরাহের ব্যবস্থা তৈরিতে তুরস্কের সহায়তা চান পুতিন।
ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির জন্য কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার অবরোধের মুখে থাকা বন্দরগুলো খুলে দিতে গত জুলাইয়ে জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি চুক্তি হয়। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ওই চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তুরস্ক। ওই চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে বৈঠকে এরদোয়ান বলেন, ‘যদিও তুরস্ক ও রাশিয়ার কিছু পদক্ষেপ নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীকে ক্ষুব্ধ করেছে, তবে এতে বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলো খুশি হবে।’
এদিকে আজকের বৈঠকে ইউক্রেন সংকট সমাধানের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া–ইউক্রেন সমস্যা নিষ্পত্তির বিষয়ে কথা বলেননি পুতিন ও এরদোয়ান।’ যদিও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে বৈঠকে আগে জানিয়েছিলেন ক্রেমলিনের এক কর্মকর্তা।