এখন থেকে পুরুষ অভিভাবক বা মাহরাম ছাড়াই হজ করতে পারবেন সৌদি আরবের নারীরা। এর জন্য তাদের নিবন্ধিত হওয়ার অনুমতি দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ। সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন থেকে অন্য নারীদের সঙ্গে দলবদ্ধভাবে হজ করতে পারবেন নিবন্ধিত সৌদি নারীরা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছরের মতো এবারও শুধু সৌদি আরবে বসবাসরত মুসলিমদেরই হজ করার অনুমতি দিচ্ছে দেশটি। তবে এতেও রয়েছে নানা বিধিনিষেধ।
সৌদি কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুসারে, এ বছর সব মিলিয়ে ৬০ হাজার জনকে হজ করার অনুমতি দেয়া হবে। আগামী জুলাইয়ে শুরু হতে চলেছে এবারের হজ। তবে এ বছর হজপ্রত্যাশীদের অবশ্যই টিকা নেয়া থাকতে হবে। যে অন্তত ১৪ দিন আগে কমপক্ষে এক ডোজ টিকা নিয়েছে অথবা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার পর টিকা নেয়া হয়েছে- শুধু এমন ব্যক্তিদেরই হজের অনুমতি দেবে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দিন দুয়েক আগেই সৌদির প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া একা বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন। অর্থাৎ বিবাহিত, অবিবাহিত বা বিচ্ছেদ হওয়া যেকোনো সৌদি নারী চাইলে একাই পছন্দের বাড়িতে থাকতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে না স্বামী, বাবা ও অন্য কোনো পুরুষের অনুমতি।
সম্প্রতি সৌদি কর্তৃপক্ষ দেশটির শরিয়া আইনের আর্টিকেল ১৬৯ এর বি ধারাটি বাতিল করেছে, যেখানে লেখা ছিল বিবাহিত, অবিবাহিত ও বিচ্ছেদ হওয়া নারীদের পুরুষ অভিভাবকের অধীনে থাকতে হবে। তবে নতুন আইনে যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারীর আলাদা থাকার অধিকার দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুরুষ অভিভাবক তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ করতে পারবেন না। কেবল ওই নারী কোনো অপরাধ করলেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে।
দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের প্রচলিত নিয়ম ছিল, প্রত্যেক নারীকেই একজন পুরুষের অধীনে থাকতে হবে। যিনি হবেন তার স্বামী, ভাই, ছেলে, বাবা অথবা চাচা। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পরামর্শে দেশটি ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নে কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে এসব বিধিনিষেধ তুলে দিচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে সৌদি আরব নারীদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এখন পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া ২১ বছরের বেশি হলেই তারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারছেন। ভ্রমণের করতে পারছেন ইচ্ছেমতো পছন্দের জায়গায়।