Image default
আন্তর্জাতিক

প্রতিবেশীদের আচরণে জার্মানিতে দুশ্চিন্তা

নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়াসহ একাধিক প্রতিবেশী দেশে করোনা মোকাবিলায় বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করায় জার্মানিতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। শুধু টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের ভিত্তিতে এমন পদক্ষেপ সম্পর্কে সংশয় রয়েছে।

‘এমারজেন্সি ব্রেক’ ও অন্যান্য পদক্ষেপ নিয়ে জার্মানি করোনা সংকটের মোকাবিলা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংক্রমণের হার এখনো যথেষ্ট দ্রুত না কমলেও পরিস্থিতির অবনতি থামানো গেছে। কিন্তু জার্মানির কিছু প্রতিবেশি দেশ যেভাবে করোনা সংকট সত্ত্বেও জনজীবন আরও স্বাভাবিক করার পথে এগোচ্ছে, তার ফলে নতুন করে দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে।

প্রায় চার মাসের লকডাউনের পর নেদারল্যান্ডসের সরকার বুধবার থেকে বেশ কিছু বাধা তুলে নিয়েছে। সে দেশেও দৈনিক সংক্রমণের উচ্চ হার ও স্বাস্থ্য পরিষেবা অবকাঠামোর ওপর মারাত্মক চাপ বিশেষজ্ঞদের দুশ্চিন্তায় ফেলছে। প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার প্রায় ৩১৭। জার্মানিতে এই মুহূর্তে সংখ্যাটি ১৫৪। নেদারল্যান্ডসে সংক্রমণের হার আরও বেড়ে গেলে ‘কোড ব্ল্যাক’ নামের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হতে পারে বলে ডিডেরিক খমার্স নামের এক ডাক্তার সতর্ক করে দিয়েছেন। তখন আইসিইউ বেড খালি না থাকলে হাসাপাতালগুলোকে রোগী বাছাই করতে হবে। অর্থাৎ কিছু রোগীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। আগামী সপ্তাহেই এমন অবস্থার আশঙ্কা করছেন তিনি।
এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সরকার ‘হিসেব করে ঝুঁকি’ নিয়ে জনজীবন কিছুটা স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিয়েছে। রাতে কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে, শর্তসাপেক্ষে দোকানবাজার ও রেস্তোরাঁ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিনেই একাধিক শহরে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা গেছে। টিকাদানের গতি আরও বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের হার আরও কমবে বলে সে দেশের সরকার আশা করছে।

জার্মানির দক্ষিণের প্রতিবেশি অস্ট্রিয়াও বিধিনিয়ম শিথিল করার পথে এগোচ্ছে। আপাতত রাজধানী ভিয়েনায় আগামী সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে কিছু বিধিনিষেধ তুলে নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শহরের বামপন্থি মেয়র। ১৯ মে থেকে দেশজুড়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ, থিয়েটার ইত্যাদি খুলে দেবার ঘোষণা করেছেন চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুয়র্ৎস। তবে প্রাদেশিক সরকারগুলি প্রয়োজনে কড়া বিধিনিয়ম আরোপ করতে পারে। নেদারল্যান্ডসের মতো অস্ট্রিয়াও টিকাকরণ কর্মসূচির সাফল্যের আশায় জনজীবন কিছুটা স্বাভাবিক করার ঝুঁকি নিচ্ছে। সুইজারল্যান্ড ও বেলিজিয়ামও কিছু বিধিনিয়ম শিথিল করছে।

প্রতিবেশি দেশগুলো জার্মানির মতো আরও কড়াকড়ির বদলে আরও শিথিল করায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে। উন্মুক্ত সীমানার কারণে জার্মানিতেও করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত বেড়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। জার্মানিতে ঘরবন্দি মানুষ নেদারল্যান্ডস বা অস্ট্রিয়ায় কেনাকাটা অথবা পর্যটনের সুযোগ নিলে এমনটা ঘটতে পারে। নর্থরাইন ওয়েস্টফালেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাগরিকদের উদ্দেশ্যে নেদারল্যান্ডস ভ্রমণ এড়িয়ে চলার আবেদন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে একই ধরনের পদক্ষেপের জন্য জার্মানিতেও চাপ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ শুধু টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের আশায় এমন পদক্ষেপ নিলে ইউরোপের সবচেয়ে জনবহুল দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

Related posts

ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ১৭ জন

News Desk

ন্যান্সি পেলোসির ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞা

News Desk

পুরো লুহানস্ক এখন রাশিয়ার দখলে: মস্কো

News Desk

Leave a Comment