Image default
আন্তর্জাতিক

প্রতি রাতে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমায় বিশ্বের ৮১ কোটি মানুষ

বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্ষুধা ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মাত্রা। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ বা ৮১ কোটি ১০ লাখ মানুষ প্রতি রাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়, ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর এ সংখ্যা বেড়েছে আরও ১৬ কোটি।
সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের চলতি বছরের গ্লোবাল হিউম্যানিটেরিয়ান প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালে করোনার প্রভাব, চরম আবহাওয়া, অভাবগ্রস্তদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিতে নানা প্রতিবন্ধকতা সমন্বিতভাবে ক্ষুধা, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার বড় কারণ।

যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘ক্ষুধা হলো একটি অস্বস্তিকর বা বেদনাদায়ক শারীরিক অনুভূতি, যা খাদ্যশক্তির অপর্যাপ্ততা থেকে সৃষ্ট।’

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার হার পরিমাপ করার জন্য বিভিন্ন দেশে খাদ্যের প্রাপ্যতা, খাদ্যের ব্যবহার এবং অপুষ্টির তথ্য এক করেছে জাতিসংঘ। এফএও বলছে, ‘যখন কোনো ব্যক্তি অর্থ অথবা খাদ্যের অনুপলব্ধতার অভাবে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশ এবং একটি সক্রিয় ও স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য থেকে বঞ্চিত হয়’, সেটিই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে এমন কিছু দেশের কথা উল্লেখ করেছে, যেখানে বর্তমানে খাদ্যের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।

আফগানিস্তান
বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে আফগানিস্তান। চার কোটি জনসংখ্যার এ দেশটির ৯৩ শতাংশ বা ৩ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষ পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে দিন পার করছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্য অনুসারে, রেকর্ড ২ কোটি ৩০ লাখ আফগান তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন। আর দুর্ভিক্ষের কাছাকাছি আছে প্রায় ৯০ লাখ। এ ছাড়া অপুষ্টিতে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে দেশটির পাঁচ বছরের কম বয়সী ১০ লাখ শিশু।

ইয়েমেন
বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ ইয়েমেন। ডব্লিউএফপির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩ কোটি জনসংখ্যার এ দেশটির প্রায় অর্ধেক (১ কোটি ৪৩ লাখ) মানুষের ঘরে পর্যাপ্ত খাবার নেই। ইয়েমেনে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রায় অর্ধেক (৪৭ দশমিক ৫ শতাংশ) দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির সম্মুখীন। ৭ বছরের যুদ্ধে দেশটির অন্তত ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং নিহত হয়েছে হাজারো।

সিরিয়া
১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের পর, সিরিয়ানরা বিশাল মাত্রায় দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন। মোট ২ কোটির মধ্যে ১ কোটি ২৪ লাখ সিরীয় জানে না তাদের পরবর্তী বেলার খাবার কোথা থেকে আসবে। দেশটিতে ৫ বছরের কম বয়সী প্রতি ৩ শিশুর মধ্যে প্রায় ১ শিশু (২৭ দশমিক ৯ শতাংশ) দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির সঙ্গে বসবাস করছে।

দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো ও সোমালিয়া
সর্বোচ্চ মাত্রায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও অপুষ্টিতে ভুগছে দক্ষিণ সুদান। দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি খাদ্যের অভাবে ভুগছে। আর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষের বাস পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে। আশঙ্কাজনক হারে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়াতেও।

তথ্য সূত্র : https://www.ajkerpatrika.com/

Related posts

‘আমাকে বলো, আমি জীবিত’

News Desk

কংগ্রেসের নতুন সভাপতি খাড়গে

News Desk

ইসরায়েলি সৈন্যের গুলিতে এক ফিলিস্তিনি যুবক নিহত

News Desk

Leave a Comment