প্রতিকি ছবি।
যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে এবং উন্নত জীবনের আশায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সাগর পথে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেন মধ্যপ্রাচ্যের শত শত মানুষ। উত্তাল সমুদ্রে ছোটো ছোটো নৌকায় করেই রওনা হয়ে যান তারা। তবে সবার কপাল ভালো হয় না। ইউরোপে পৌঁছার আগেই অনেককে বরণ করতে হয় করুণ পরিণতি। হারাতে হয় প্রাণ।
নৌকা উল্টে বা ঝড়ের কবলে পড়ে উন্নত জীবন পাওয়ার আশা-আকাক্সক্ষা মুহূর্তেই ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়। সেসব অভাগাদেরই একজন হলেন ইয়েমেনের আল-থাইফানি। যিনি একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারী ছিলেন। নামের পাশে সর্বোচ্চ ডিগ্রি থাকলেও ইয়েমেনে যুদ্ধ চলায় কোনো উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। আর এ কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু মাঝসমুদ্রে তাকে বহনকারী নৌকাটি উল্টে যায়।
মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ গত বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্পেন উপকূল থেকে পিএইচডি ডিগ্রিধারী আল-থাইফানির মরদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।
বাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, মরক্কো থেকে ছোটো নৌকায় আরো কয়েকজনের সঙ্গে স্পেনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন আল-থাইফানি। কিন্তু দেশটির ইউতা শহরের কাছাকাছি এসে তাকে বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়।
ইয়েমেনের সংবাদমাধ্যম আল-মাসদার অনলাইন জানিয়েছে, আল-থাইফানি মরক্কোর রাজধানী রাবাতের মোহাম্মদ ভি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘আধুনিক ইসলামিক চিন্তা’ নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ইয়েমেনের একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। তবে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা তার আত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার জন্য আল-থাইফানিকে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত করেন।
এরপর যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অন্ধকারাচ্ছন্ন ইয়েমেন ছেড়ে ইউরোপে চলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ চেষ্টায় করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছে তাকে।
সংবাদমাধ্যম আল-মাসদার অনলাইনের সম্পাদক আলী আল-ফাকিহ আরব নিউজকে বলেছেন, ‘যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ায়, অনেক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ ইয়েমেনে ফিরতে পারছেন না। এ কারণে নিশ্চিত ভবিষ্যতের আশায় ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।’
এদিকে একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারীর অবৈধ পথে সাগর পাড়ি দেয়ার বিষয়টি সামনে আসার পর ইয়েমেন যুদ্ধ ও সেখানকার মানুষের পরিস্থিতির ভয়াবহতা আবারো প্রকাশ পেল।
এসএম