করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়েছে ফ্রান্সে। গত জুলাইতে ফ্রান্সে করোনার দৈনিক সংক্রমণ সর্বোচ্চ ৩ হাজারে পৌঁছেছিল। চলতি মাসে তা ২০ হাজারে পৌঁছে গেছে। প্রতিদিনই সংক্রমণের হার লাফিয়ে বাড়ছে। উদ্বেগ বাড়িয়েছে ডেলটার সংস্করণ। এরই মধ্যে নতুন স্বাস্থ্য পাশ চালু করার কথা ভাবছে ফরাসি সরকার। এরই মধ্যে বেশ কিছু জায়গায় এ ধরনের পাশ চালু হয়ে গেছে। সরকার জানিয়েছে, এবার থেকে বাসে-ট্রেনে উঠলেও ঐ পাশ দেখাতে হবে। খবর ডয়চেভেলের
স্বাস্থ্য পাশে একটি কিউআর কোড থাকবে। সেই কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে দুটি টিকা নেওয়া আছে কি না। টিকা নেওয়া থাকলে অবাধে সর্বত্র যাতায়াত করা যাবে। তবে করোনাবিধি মানতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়া না থাকলে বহু জায়গাতেই যাওয়া যাবে না। এমনকি, বাসে-ট্রেনেও ওঠা যাবে না। ৪৮ ঘণ্টা আগের আরটিপিসিআর নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট থাকলেই যাতায়াত করা যাবে। সরকারের দাবি, নতুন নিয়ম চালু করলে টিকা নেওয়ার প্রবণতা আরও বাড়বে।
স্বাস্থ্য পাশের প্রতিবাদে এবং টিকা নেওয়ার বিরুদ্ধে ফ্রান্সের বহু মানুষ গত সপ্তাহান্তেও বিক্ষোভ করেছেন। তারা বলছেন, কোনোভাবেই তারা টিকা নেবেন না। টিকা নেওয়া বা না নেওয়া ব্যক্তি অধিকারের বিষয়। সরকার তা চাপিয়ে দিতে পারে না। বস্তুত, সরকার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে পারেনি। কিন্তু এমন ব্যবস্থা করছে, যাতে টিকা না নিলে স্বাভাবিক জীবনযাপন মুশকিল হয়ে যায়।
গত দেড় বছরে করোনার কারণে আরও অনেক দেশের মতোই ফরাসি অর্থনীতিও ধাক্কা খেয়েছে। মাসের পর মাস লকডাউন থাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসায়ীরা। ফরাসি দোকান মালিকদের বক্তব্য, আগে রেস্তোরাঁয় যে পরিমাণ মানুষ আসতেন, করোনার পর তা প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। নতুন পাশ-বিধি চালু হলে মানুষের সংখ্যা আরও কমতে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা। তবে একই সঙ্গে দোকানদার এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের বক্তব্য, করোনার কথা মাথায় রেখে নতুন নিয়ম সবার মেনে নেওয়া উচিত। নইলে করোনা আটকানো যাবে না।
ফরাসি সরকার বলছে, চতুর্থ ঢেউয়ে দেশ জুড়ে ডেলটা সংস্করণ ছড়িয়ে পড়ছে। নতুন এই সংস্করণ কিছুদিন আগে ভারতে ছড়িয়েছিল। সাধারণ করোনা ভাইরাসের চেয়ে অনেক দ্রুত ছড়াতে পারে নতুন এ ভ্যারিয়েন্ট। গত এক সপ্তাহে ফ্রান্স তা বুঝতেও পারছে।