করোনাভাইরাস নিয়ে সারাবিশ্বের গবেষকরাই নানা ধরনের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরছে যা আসলেই ভয়ের বিষয়। গত বছর এপ্রিলে চীনের একদল বিজ্ঞানী বলেছেন, নতুন করোনা ভাইরাস কমপক্ষে ৩০টি ভিন্নরূপে রূপান্তরিত হয়েছে। করোনা মহামারীতে এটা হতে পারে খুব ভয়াবহ এক খবর।
গত বছরের জুলাইয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, বিশেষ পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের ‘বায়ুবাহিত সংক্রমণের’ আশঙ্কা থাকতে পারে। যেখানে মানুষের ভিড় বেশি, ঘর বন্ধ কিংবা বাতাস চলাচলের ভালো ব্যবস্থা নেই- সে রকম জায়গায় বাতাসের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যায় না।
সম্প্রতি বাতাসে করোনাভাইরাস বেশি ছড়াচ্ছে এমন শক্তিশালী প্রমাণ পেয়েছে মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট। এ বিষয়ে ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডাসহ ৩২ দেশের বিজ্ঞানীরাও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসে ছড়ানোর কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরণের করোনায় মৃত্যু হার বেশি। আক্রান্ত হলে দেরি না করে বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে ৫ দিনের বেশি জ্বর বা শ্বাসকষ্ট বাড়লে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে।
ফিনল্যান্ডের আলটো ইউনিভার্সিটি, ফিনিশ মেটেরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট, ভিটিটিস টেকনিক্যাল রিসার্চ সেন্টার ও হেলসিঙ্কি ইউনিভার্সিটির গবেষক দল বলছে, বাতাসের মাধ্যমে করোনা বেশি ছড়াচ্ছে। এ বিষয়ে শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়ার তথ্যও দিয়েছে মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট। ৩২ দেশের ২৩৯ বিজ্ঞানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চিঠি দিয়ে বলেছে, বায়ুবাহিত সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে করোনাভাইরাস গাইডলাইন আপডেট করা জরুরি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ধরনের ভাইরাস খুবই শক্তিশালী। সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে এটি ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। এমন অবস্থায় বর্তমানে সংক্রমণ হার বেড়েছে অনেক। বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও। হাসপাতালে বেড কম থাকা ও সংক্রমণ ঝুঁকির আশঙ্কায় অনেকেই বাসায় থেকেও চিকিৎসা নিচ্ছে।
নতুন ধরনের করোনায় রোগীর অবস্থা দ্রুত অবনতি হয় জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসায় অবস্থান করলেও নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারিভাবে আইসোলেশান সেন্টার বাড়াতে হবে এবং সেই সঙ্গে জনসমাগম এড়িয়ে অধিকতর সতর্ক থাকাতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।