চিনি। ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। সরবরাহ সংকটের উদ্বেগে দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তথ্য বলছে, নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) গতকাল চিনির দাম বেড়ে তিন সপ্তাহের সর্বোচ্চে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে লন্ডনের আইসিই ফিউচারস এক্সচেঞ্জে ভোগ্যপণ্যটির দাম বেড়ে এক সপ্তাহের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকরা জানান, সম্প্রতি ওপেকের উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ফলে চিনিকলগুলো চিনি উৎপাদনের পরিবর্তে জৈব জ্বালানি উৎপাদনে ঝুঁকছে। এতে পণ্যটির সরবরাহ সংকট দেখা দেয়ার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, যা দাম বাড়ার পেছনে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করছে।
অন্যদিকে শীর্ষ দেশ ব্রাজিলে আখ উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে চিনি উৎপাদন কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। খরার কারণে উৎপাদন কমার আশঙ্কা রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও। এ বিষয়গুলো বাজারকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলছে। তবে ভারতের ঊর্ধ্বমুখী উৎপাদন ও রপ্তানি বাজারে কিছুটা ভারসাম্য আনতে পারে বলে প্রত্যাশা খাতসংশ্লিষ্টদের।
এদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় যে সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে তা স্থায়ী হবে না বলে মত দিয়েছেন অনেক বিশ্লেষক। এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল সুগার অরগানাইজেশন (আইএসও) এক প্রতিবেদনে আসন্ন বিপণন মৌসুমে চিনির বৈশ্বিক উদ্বৃত্তের পূর্বাভাস দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবরে চিনির বৈশ্বিক বিপণন মৌসুুম ২০২২-২৩ শুরু হয়। শেষ হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। এ মৌসুমে বাজারে উদ্বৃত্ত থাকবে ৫৬ লাখ টন চিনি।
এর আগে জুলাইয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স চিনির বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে একটি পূর্বাভাস দিয়েছিল। ওই পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২২-২৩ মৌসুমে চিনির বৈশ্বিক উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৮ লাখ টনে।
এদিকে আইএসওর প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে চিনি উৎপাদন বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় আরোহণ করবে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৮ কোটি ১৯ লাখ টনে, যা আগের মৌসুমের তুলনায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
এ মৌসুমে কমলেও আগামী বৈশ্বিক উৎপাদন বাড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে ব্রাজিল। আসন্ন মৌসুমে দেশটি ৩ কোটি ৮৫ লাখ টন চিনি উৎপাদন করবে। চলতি মৌসুমে প্রাক্কলিত উৎপাদন ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৩১ লাখ টন।
এদিকে থাইল্যান্ডে চিনি উৎপাদন বেড়ে ১ কোটি ২০ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মৌসুমে উৎপাদন ধরা হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ টন। দেশটির কৃষি খাত দুই বছরের তীব্র খরা থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এ কারণেই উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ২০২০-২১ মৌসুমে দেশটির উৎপাদন ৭১ লাখ টনে নেমে গিয়েছিল।