মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যটিতে এ নিয়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে তৃতীয় মৃত্যু হলো। করোনা পজিটিভ অবস্থাতেই এই ছত্রাকের সংক্রমণ নিয়ে কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বছর ৪৭ বয়সী ওই রোগী। রোববার মারা যান তিনি।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে বাঁকুড়া মেডিকেলে বর্তমানে আরও সাত জনের চিকিৎসা চলছে। তাদের মধ্যে তিন-চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোববার মারা যাওয়া ব্যক্তির বাড়ি বাঁকুড়ার ছাতনা থানা এলাকায়। করোনা নিয়েই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন বাঁকুড়া মেডিকেলে। কোভিড থাকায় ঝুঁকি নিয়েই গত সপ্তাহে তার শরীরে অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, বেশ বড় ছিল সেই অপারেশন। কালো ছত্রাকের থাবায় পচন ধরে যাওয়ায় রোগীর বাম চোখ-সহ মুখের বেশ খানিকটা অংশ কেটে বাদ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা। তারপরের কয়দিন ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দেয়া হয়েছিল রোগীকে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। রোববার শেষ হয় তার লড়াই। সংক্রমণ ব্রেনে চলে গিয়েছিল বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
রোগীর মৃত্যুর কথা স্বীকার করে বাঁকুড়া মেডিকেলের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে এই অসুখে মৃত্যুহার বেশি। তা সত্ত্বেও রোগীদের সুস্থ করে তুলতে আমাদের অভিজ্ঞ চিকিৎসক টিম আপ্রাণ লড়াই চালাচ্ছেন।’ এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতনতার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
অধ্যক্ষ বলেন, ‘নাক-চোখের কোনো সমস্যা হলে বা মুখে ফোলা ভাব লক্ষ করা গেলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও দুই বর্ধমান মিলিয়ে এ পর্যন্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত নয়জন রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে বাঁকুড়া মেডিকেলে। তাদের মধ্যেই একজনের মৃত্যু হলো রোববার। এর মধ্যে একজনকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন এই হাসপাতালে সাতজনের চিকিৎসা চলছে।