ভারতের কেরালায় আদানি বন্দর নির্মাণের বিরোধিতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। রবিবার রাতে ভিজিনজাম থানায় হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় অন্তত ৩৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভিজিনজামের সাধারণ মানুষ চান না, তাদের এলাকায় এই বন্দর তৈরি হোক। এর বিরুদ্ধে টানা চার মাস ধরে চলে প্রতিবাদ। রবিবার পাঁচ জনকে আটক করে পুলিশ। এরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা থানায় হামলা চালায়।
স্থানীয় মানুষজন লাঠি ও পাথর নিয়ে থানায় হামলে পড়ে। এ সময় তারা সেখানে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশের দাবি, এ ঘটনায় তাদের চারটি জিপ, দুইটি ভ্যান ও ২০টি মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া থানার আসবাবপত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও নষ্ট হয়েছে।
থানায় হামলার পর অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে সেখানকার পরিস্থিতি। এলাকায় ২০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এরপর থেকেই উপকূলীয় এলাকায় উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমি ক্ষয় শুরু হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে জেলেদের ওপর। ইতোমধ্যেই অনেকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। বিপাকে পড়েছে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের প্রায় ৫৬ হাজার মানুষ। তাই সরকার যেন অবিলম্বে এটি নির্মাণ বন্ধের আদেশ দেয়।
এদিকে আদানি গ্রুপের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইন মেনেই এই বন্দরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকদের কাছ থেকে যাবতীয় পরামর্শও নেওয়া হয়েছে।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের এডিজি বলেছেন, ‘বিক্ষোভ গত ১২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলছে। আমরা সংযম বজায় রেখে চলেছি। কিন্তু রবিবার জনতা থানা ভাঙচুর করে এবং কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায়।’
বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় টিভি চ্যানেলের এক সাংবাদিকের ওপরও হামলা চালায়। তার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তাকে তিরুবনন্তপুরম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের নেতৃত্বে এলাকার খ্রিস্টান বাসিন্দাদের অনেকেই থানায় হামলায় অংশ নেয় জানা গেছে। এরইমধ্যে গির্জা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। ফাদার ই পেরেইরা বলেছেন, শান্তি বজায় রাখতে চার্চ কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, রয়টার্স।