করোনা থেকে বাঁচতে এখন একমাত্র উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে ভ্যাকসিনকে। নিজ দেশের নাগরিকদের নিরাপদ রাখতে ভ্যাকসিন সরবরাহে তোড়জোড় শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ধনী দেশগুলো। আর দরিদ্র দেশগুলো অনেকটা পিছিয়েই আছে।
ধনী এবং দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে ভ্যাকসিন বিতরণে বিভাজন দেখা দিয়েছে। এই ভারসাম্যহীন অবস্থাকে ‘বেদনাদায়ক’ বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরেই কোভিড-১৯ ভাইরাসরোধী ভ্যাকসিন বিতরণে ভারসাম্যের ওপর জোর দিচ্ছেন।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১শ দেশে প্রায় ৪ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে। এক বছরের কম সময়ে ১৯০ দেশে দুই বিলিয়নের বেশি ভ্যাকসিনের ডোজ সরবরাহের আশা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গেভি পরিচালিত কোভ্যাক্স কর্মসূচি। বিশেষ করে তারা চায় ধনী দেশগুলোর পাশাপাশি ৯২টির বেশি দরিদ্র দেশেও ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক তেদ্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস বলেন, ‘ভ্যাকসিন বিতরণে বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ ভারসাম্যহীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে গড়ে প্রায় চারজনের মধ্যে একজন ভ্যাকসিন গ্রহণ পাচ্ছে। অপরদিকে, দরিদ্র দেশগুলোতে ৫শ জনের বেশি মানুষের মধ্যে একজন ভ্যাকসিন পাচ্ছে। এ থেকেই চরম বৈষম্য স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
কোভ্যাক্সের আওতায় মার্চের শেষ দিকে বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ১০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ বিতরণ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র প্রায় চার কোটি ডোজ বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে।
চলতি বছর বিশ্বে ভ্যাকসিন বৈষম্যের ক্ষেত্রে ভয়াবহ নৈতিক ব্যর্থতার বিষয়ে সতর্ক করেন তেদ্রোস আধানম। তিনি বলেন, ‘মি ফার্স্ট’ বা আমিই প্রথম এই নীতিই এর জন্য দায়ী।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, রাশিয়া এবং চীনের তৈরি ভ্যাকসিন ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন বিতরণে ভারসাম্য নেই। ডিউক গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশন সেন্টারের এক গবেষণা বলছে, উচ্চ আয়ের দেশগুলো ৪ দশমিক ৬ ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছে। অপরদিকে দরিদ্র দেশগুলোর সংগ্রহে আছে ৬৭০ মিলিয়ন ডোজ।