মস্কোতে অস্ত্রমেলার উদ্বোধনে পুতিন
আন্তর্জাতিক

মস্কোতে অস্ত্রমেলার উদ্বোধনে পুতিন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোকে সর্বাধুনিক অস্ত্র বিক্রি করতে উৎসাহী রাশিয়া।

মস্কোর অদূরে শুরু হয়েছে ‘আর্মি ২০২২’ মিলিটারি এক্সপো। রুশ সেনা আধুনিক সব অস্ত্রের প্রদর্শনী করছে সেখানে। সোমবার সেই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিকে এই অস্ত্র বিক্রি করতে চায় রাশিয়া। প্রায় প্রতিটি অস্ত্রই কোনো না কোনো যুদ্ধ ব্যবহৃত হয়েছে। খবর ডয়চে ভেলের।

ছোট বন্দুক থেকে যুদ্ধের গাড়ি, ট্যাঙ্ক, বিমান ও ড্রোন ধ্বংসকারী মিসাইল সবকিছুই রাখা হয়েছে প্রদর্শনীতে। রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই কঠিন পরিস্থিতিতেও অন্তত ৭২টি দেশের প্রতিনিধি ওই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। অস্ত্র কেনাবেচার জন্যই তারা এসেছেন।

পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর সরাসরি অস্ত্র বিক্রির কথা বললেন পুটিন। কারণ, যুদ্ধের পর রাশিয়ার অস্ত্রের বাজার মার খেয়েছে। অন্যদিকে যুদ্ধে রাশিয়ার সেনার বিপুল ক্ষতিও হয়েছে বলে তাদের দাবি। যদিও রাশিয়া একথা কখনোই স্বীকার করেনি।

জেলেনস্কির বক্তব্য

পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিজঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র থেকে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার সেনা। সোমবার দৈনিক ভিডিওবার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যারা এখনও এর বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে না, তারা প্রকারান্তরে সন্ত্রাসীদের সমর্থন করছে। যে কোনো সময় ওই পরমাণুকেন্দ্রে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জেলেনস্কি। ইতিমধ্যেই পরমাণু কেন্দ্রে একাধিকবার বিস্ফোরণ হয়েছে। কোনোভাবে পরমাণু চুল্লি বা পরমাণু বর্জ্যে বিস্ফোরণ হলে ভয়াবহ ক্ষতির সম্ভাবনা আছে বলে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন।

বস্তুত, এর আগে একাধিকবার জেলেনস্কি বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলির উচিত রাশিয়ার সেনার বিরুদ্ধে সরব হওয়া। পরমাণু কেন্দ্রটিকে দ্রুত ফাঁকা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে বলে বার বার দাবি করেছেন জেলেনস্কি। এর আগে ইউক্রেনের সেনা জানিয়েছিল, রাশিয়ার সেনা ওই পরমাণু কেন্দ্রের ভিতর থেকে একের পর এক আক্রমণ চালাচ্ছে। কিন্তু ইউক্রেনের সেনা পাল্টা আক্রমণ করতে পারছে না। পরমাণু কেন্দ্রের ক্ষতি হবে ভেবেই তারা আক্রমণ থেকে বিরত থাকছে।

রাশিয়ার দাবি

জাতিসংঘ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক পরমাণু বিষয়ক সংস্থার প্রতিনিধিদেরও রাশিয়া ওই পরমাণু কেন্দ্রের ভিতর ঢুকতে দিচ্ছে না। রাশিয়া অবশ্য এই দাবি মেনে নেয়নি। তাদের বক্তব্য, কখনোই তারা আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থাকে আটকায়নি। জাতিসংঘ চাইলেও সেখানে যেতে পারে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।

পাঁচ ইউরোপীয়ের বিচার শুরু

দোনেৎস্কে পাঁচ ইউরোপীয় বন্দির বিচার শুরু হয়েছে। দোনেৎস্ক এখন রাশিয়ার দখলে। সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশাসন আটক পাঁচ ইউরোপীয় বন্দির বিচার শুরু করেছে। ক্রেমলিনের মদতপুষ্ট বিচারসভাতেই বিচার হচ্ছে তাদের। সোমবার তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এখনও শাস্তির বিধান দেয়া হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে।

এই পাঁচ বন্দির মধ্যে সুইডেন ও ক্রোয়েশিয়ার ব্যক্তি আছেন। ইউক্রেনের হয়ে তারা লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিলেন বলে রাশিয়ার অভিযোগ। রাশিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, অক্টোবরে তাদের পরবর্তী শুনানি হবে।

দোনেৎস্কে হতে পারে গণভোট

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দোনেৎস্কে কিছুদিনের মধ্যেই গণভোট হতে পারে। রাশিয়া চাইছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে থাকা দোনেৎস্ককে সরাসরি রাশিয়ার অংশ হিসেবে চিহ্নিত করতে। সে কারণেই সেখানে গণভোটের আয়োজন করা হচ্ছে। যুদ্ধের একেবারে গোড়ায় পূর্ব ইউরোপের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছিল। ওই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা রুশ সেনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়ই করেছিল। এখনও ওই অঞ্চল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে। রাশিয়া এবার সরাসরি তা দখলে নিতে চাইছে বলে রিপোর্টে প্রকাশ।

ডি- এইচএ

Source link

Related posts

পশ্চিমবঙ্গে ইয়াসের আঘাতে নিহত ৩

News Desk

চীনে বন্যা-ভূমিধস থেকে সন্তানকে বাঁচিয়ে মা মারা গেলেন

News Desk

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে কর্মীদের ‘টাই’ না পরার আহ্বান স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর

News Desk

Leave a Comment