Image default
আন্তর্জাতিক

মাঝেমধ্যে মনে হয় হৃদযন্ত্রটা ঠিকমতো কাজই করছে না: আগুয়েরো

ফুটবল ছেড়েছেন বেশি দিন হয়নি। ছেড়েছেন বলা ভুল হবে, ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। যে হৃদয়ের সবটুকুতে ফুটবল ছিল, সেই হৃদয়ই আর ফুটবল খেলার অনুমতি দিচ্ছে না। ৩৩ বছর বয়সেই হঠাৎ ফুটবলকে বিদায় বলে দেওয়া সের্হিও আগুয়েরোর জীবন এখন কেমন কাটছে?

আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের কথাগুলো তাঁর ভক্ত তো বটেই, যেকোনো ফুটবল-ভক্তের মনেই কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেবে নিশ্চিত। এই কদিন আগেও ফুটবল মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো আগুয়েরোর এখন নাকি অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্ত লাগে। আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের মনে হচ্ছে, তাঁর হৃদযন্ত্র কাজ করাই বন্ধ করে দিয়েছে!

ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে চুক্তি শেষে গত আগস্টে বার্সেলোনায় যাওয়ার পর ভাগ্য যেন বারবার আগুয়েরোর জন্য দুঃসংবাদই নিয়ে এসেছে। বার্সায় গিয়েছিলেন প্রিয় বন্ধু লিওনেল মেসির পাশে ক্লাবেও খেলার স্বপ্ন নিয়ে, অথচ তিনি যাওয়ার পর মেসি বার্সা ছেড়ে চলে গেলেন পিএসজিতে।

তারপর আগুয়েরো নিজে পড়লেন চোটে। সেটি সারিয়ে মাঠে ফিরে আস্তে আস্তে ছন্দে ফিরছিলেন, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচে বার্সার জার্সিতে প্রথম গোলও পেলেন, তারপরই সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি হলেন আগুয়েরো!

অক্টোবরের শেষ দিকে আলাভেসের বিপক্ষে ম্যাচে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন আগুয়েরো, মাঠেই বসে পড়েন। এরপর হেঁটে মাঠ ছাড়লেও হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, তাঁর হৃৎপিণ্ডে অনিয়মিত স্পন্দনের সমস্যা ধরা পড়েছে।

প্রথমে বার্সা জানায়, তিন মাস মাঠের বাইরে থাকবেন আগুয়েরো। কিন্তু অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম প্রায় নিশ্চিত করে জানিয়ে দেয়, আর ফুটবলে ফেরা হচ্ছে না আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের।

শেষ পর্যন্ত তা-ই সত্যি হলো। গত ডিসেম্বরে কান্নাভেজা সংবাদ সম্মেলনে আগুয়েরো জানিয়ে দেন, হৃৎপিণ্ডটা তাঁকে আর ফুটবল খেলার অনুমতি দিচ্ছে না। ৩৩ বছর বয়সেই বুটজোড়া তাই তুলে রাখতে হয় তাঁকে। এরপর থেকে বলতে গেলে প্রচারের আড়ালেই কেটেছে আগুয়েরোর দিন। কিন্তু গতকাল ভিডিও সম্প্রচারমাধ্যম টুইচে আগুয়েরোর কথাগুলো শুনে আবার ফুটবলপ্রেমীদের দীর্ঘশ্বাস ঝরেছে।

অবসর নেওয়ার পর জীবন কেমন কাটছে, হৃদপিন্ড এখন কেমন আছে, সে নিয়ে আগুয়েরো বলছিলেন, ‘এখন আমি যদি একটু-আধটু ফুটবল খেলারও চেষ্টা করি, আমার নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমি কি একটা স্প্রিন্টও ঠিকভাবে এখন শেষ করতে পারব! মনে হয় যেন আমার হৃৎপিণ্ডটা ঠিকমতো কাজই করছে না।’

আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৪১টি গোল করা আগুয়েরো আকাশি-সাদা জার্সিটাতে তাঁর ১০১ ম্যাচের শেষ কয়েকটি খেলেছেন গত জুনে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকায়। খুব বেশি একটা মাঠে নামা হয়নি টুর্নামেন্টে, তবে আর্জেন্টিনার ২৮ বছরের আন্তর্জাতিক শিরোপা–খরা কাটানোর উৎসবে সঙ্গী ছিলেন আগুয়েরো-এই তৃপ্তিটা নিয়ে অন্তত ক্যারিয়ারের শেষ হয়েছে তাঁর।

তবে আর্জেন্টিনা নয়, আগুয়েরোর ক্যারিয়ারে সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে তাঁর ম্যানচেস্টার সিটির সময়টা। ম্যানচেস্টার সিটির সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি, সে পথে প্রিমিয়ার লিগে ২৭৫ ম্যাচে করেছেন ১৮৪ গোল। পাঁচবার প্রিমিয়ার লিগ শিরোপাও এনে দিয়েছেন।

তবে এর প্রথমটিই তো সম্ভবত আগুয়েরোর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় শিরোপা। ২০১২ সালে লিগের শেষ দিনে একেবারে শেষ মুহূর্তে আগুয়েরোর গোলেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে টপকে লিগ জেতে সিটি, ঘোচে তাদের ৪৪ বছরের লিগ শিরোপা–খরা।

Related posts

বছরে ১৫ হাজারের বেশি শরণার্থী নেবে যুক্তরাষ্ট্র

News Desk

ওয়ালমার্ট স্টোরে গুলি, নিহত ১০

News Desk

রানির যা জানি বা জানি না

News Desk

Leave a Comment