মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার এবং সুপারবাগের কারণে দ্বিতীয় দফায় ভারতে মহামারি করোনা পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে বলে সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় এমনই দাবি করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্স বা আইসিএমআর। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের ১০টি হাসপাতালে এক সমীক্ষা চালায় আইসিএমআর। তাতে দেখা গেছেযে, অর্ধেকরও বেশি কোভিড রোগী যারা দ্বিতীয়বার কিংবা মারাত্মক ছত্রাকঘটিত রোগে সংক্রমিত হয়েছেন তাদের মৃত্যু হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া, অ্যাসিনেটোব্যকটর বওমানি এবং সিউডোমোনাস অ্যারুগিনোসা— এগুলো হলো সাধারণ ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে দীর্ঘদিন থাকা কোভিড রোগীকে এসব অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।
দিল্লির গুরুগ্রামের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অমিতাভ মালিক জানিয়েছেন, মানবদেহে কোনও না কোনও ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক আক্রমণ চালিয়েই যাচ্ছে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেই ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে অনবরত।
কিন্তু দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে আপস করে যখন ডায়াবেটিস কিংবা ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত মাত্রায় স্টেরয়েড দেওয়া হয়, তখন সেটাই আমাদের শরীরকে এ ধরনের ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার জন্মভূমি বানিয়ে ফেলে এবং সেগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
চিকিৎসক মালিক আরও বলছেন, ‘ডায়াবেটিস রয়েছে এমন ব্যক্তি যখন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের স্টেরয়েড দেওয়া হচ্ছে। ফলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। এই ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে যথেচ্ছ স্টেরয়েড ব্যবহার না করাই ভাল।’
গত কয়েক সপ্তাহে ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রকোপ যথেষ্ট বেড়েছে। দেশটির প্রায় ১২ হাজার মানুষ এই ছত্রাকে আক্রান্ত। সংক্রমণ বেশি গুজরাট, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও দিল্লিতে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লির রাজ্য সরকার ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে।