Image default
আন্তর্জাতিক

মার্কিন সাবমেরিন তাড়ানোর দাবি রাশিয়ার, যুক্তরাষ্ট্রের অস্বীকার

প্রশান্ত মহাসাগরে কুরিল দ্বীপপুঞ্জের কাছে রাশিয়ার পানিসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাবমেরিন শনাক্ত করার দাবি করেছে মস্কো। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাতে সংবাদমাধ্যম স্পুতনিক জানিয়েছে, সতর্কসংকেত দেওয়ার পরও মার্কিন সাবমেরিনটি সরে যায়নি। পরে পানিসীমা সুরক্ষাসংক্রান্ত নীতিমালা মেনে এটিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রুশ পানিসীমা লঙ্ঘন করে মার্কিন সাবমেরিনের উপস্থিতির অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গতকাল শনিবার সকালে রাশিয়া দাবি করে, কুরিল দ্বীপপুঞ্জ এলাকার উরুপ দ্বীপের কাছে মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে একটি মার্কিন সাবমেরিন শনাক্ত করেছে তারা। রাশিয়ার নৌ মহড়া চলছে, এমন একটি এলাকায় ভার্জিনিয়া শ্রেণির সাবমেরিনটি ঢুকে পড়েছিল। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, সাবমেরিনটিকে অবিলম্বে ওপরে উঠে আসতে বলা হয়েছিল।

রুশ ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই সতর্কসংকেত দেওয়া হয়। কিন্তু সাবমেরিনটি সেসব সতর্কতা উপেক্ষা করেছে। এরপর সমুদ্র তলদেশের সীমানা সুরক্ষা নীতির আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, রুশ সাবমেরিন বিধ্বংসী ফ্রিগেট (যুদ্ধজাহাজ) ‘মার্শাল শাপোশনিকভ’-এর ক্রুরা ‘সংশ্লিষ্ট পদ্ধতি’ ব্যবহার করেছেন। এরপর সাবমেরিনটি দ্রুত ওই এলাকা ছেড়ে চলে যায়।

এ ঘটনায় মস্কোতে নিয়োজিত মার্কিন দূতাবাসের সামরিক বিভাগের এক প্রতিনিধিকে তলব করা হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করে, সাবমেরিনের এমন উসকানিমূলক আচরণ রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এ ধরনের আচরণ বন্ধ করতে হবে। নিজেদের পানিসীমায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার রাশিয়ার রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এদিকে এএফপি জানিয়েছে, সাবমেরিন-সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়া তাদের পানিসীমায় আমাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে যে অভিযোগ তুলেছে, তার কোনো সত্যতা নেই।’

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন কায়েল রেইনস বলেন, মার্কিন সাবমেরিনের সুনির্দিষ্ট অবস্থানের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করবেন না। তবে কায়েল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পানিসীমায় আমরা নিরাপদে বিমান ও নৌ পরিচালনা করি এবং কার্যক্রম চালিয়ে থাকি।’

ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের উত্তেজনা চলার মধ্যেই মার্কিন সাবমেরিনের বিরুদ্ধে সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনল মস্কো। পশ্চিমা বিশ্বের অভিযোগ, ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। ওয়াশিংটনের আশঙ্কা, যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে মস্কো। তবে রাশিয়া বরাবর বলে আসছে, হামলা চালানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। এ ধরনের অভিযোগকে ‘উসকানিমূলক’ বলে উল্লেখ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের উত্তরে কুরিল দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সোভিয়েত সেনারা এর দখল নেওয়ার পর থেকে এ দ্বীপপুঞ্জ মস্কোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Related posts

বিশ্ববাজারে রেকর্ড গড়েছে পাম ও সয়াবিন তেল

News Desk

বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের ঘটনায় নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীকে জরিমানা

News Desk

অস্ত্র যখন ‘পণ্য’ হয় যুদ্ধ তখন বিজ্ঞাপন

News Desk

Leave a Comment