ভারতের কলকাতায় আদালতে আলোচিত পি কে হালদার। ফাইল ছবি
বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারকে ফেরত দেবে ভারত।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নবমবারের মতো কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতের সিবিআই স্পেশাল কোর্টে অভিযুক্তদের তোলা হয় এসময় ইডি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আজ দুপুর ১টার দিকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে (ব্যাঙ্কশাল) তোলা হয় বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে সিবিআই স্পেশাল কোর্ট-৪ এর বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায় ৫৬ দিন পর আগামী ১৭ নভেম্বর অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, অভিযুক্ত প্রত্যেককেই আগামী ১৭ নভেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে। এ পর্যন্ত তারা কারাগারেই থাকবেন। প্রয়োজনে ইডির কর্মকর্তারা কারাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন। তবে কারাগারে থাকা অবস্থায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বা নতুন কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়নি বলেও এদিন জানান ইডির আইনজীবী।
এই মুহূর্তে অভিযুক্ত পি কে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে। অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।
এর আগে গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ১০০ পাতার ঐ চার্জশিটে পি কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রয়েছে। এক্ষেত্রে কেবল ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-২০০২’ মামলায় ঐ ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়েছে। চার্জশিটে নাম রয়েছে তাদের দুটি সংস্থার নামও। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তরফে এদিন সাড়ে ৪ হাজার পাতার যে রিলাইড আপন ডকুমেন্টস (আরইউডি)-এর কপি জমা দেওয়া হয়েছিল, সেই কপি অভিযুক্তদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং অভিযুক্তরা তাতে স্বাক্ষরও করেন। সেক্ষেত্রে আগামী ১৭ নভেম্বর এই আরইউডি-এর কপি যাচাই করে অভিযুক্তরা আদালতে জানাবেন।
ইডি সূত্র বলছে, চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে পি কে হালদারকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরানোর ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নতুন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা দায়ের হবে না বলেও এদিন নিশ্চিত করা হয়েছে।
মামলার গতিপ্রকৃতি হিসাব করে এই মামলা আর দীর্ঘায়িত করতে চাইছে না ইডি। এমনকি এই মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ারও পক্ষপাতী নয় তারা। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি বা মার্চের মধ্যেই এই মামলায় রায় দেওয়া সম্পন্ন হবে বলেই আশাবাদী ইডি। তারা বলছে, এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে কমপক্ষে ৭ বছর জেল হতে পারে অভিযুক্তদের। এরপরই ভারতের আদালতের ঘোষিত সাজার মেয়াদ বাংলাদেশে অতিবাহিত করবে এমন শর্তে ভারত-বাংলাদেশ বন্দি প্রত্যাপন চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে পি কে হালদারসহ ৬ অভিযুক্তকে।
এমকে