আর্টেমিস ১ নভোযান। ছবি: বিবিসি
নাসার চন্দ্রাভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। নাসা জানিয়েছে, আর্টেমিস ১ নভোযানকে স্পেস লঞ্চ সিস্টেম নামের যে মেগারকেটটি বয়ে নিয়ে যাবে, তার আরএস-২৫ ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে আর্টেমিস ১ নভোযানের উৎক্ষেপণ।
সমস্যা সমাধান হলে আগামী ২ সেপ্টেম্বর নভোযানটি উৎক্ষেপণ করা হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের প্যাড ৩৯বি থেকে আর্টেমিস প্রোগ্রামের প্রথম মহাকাশযান আর্টেমিস ১ আজ বাংলাদেশ সময় ৬টা ৩৩ মিনিটে উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। এই লঞ্চ প্যাড থেকেই ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১০ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।
স্পেস লঞ্চ সিস্টেম বা এসএলএস মেগারকেটের প্রথম ফ্লাইট আর্টেমিস ১। এটি এখন পর্যন্ত মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট। এর দৈর্ঘ্য ৩২২ ফুট। মূলত মানুষবিহীন একটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইট এটি। এতে কোনো নভোচারী থাকবে না। তবে চারজন নভোচারী যাওয়ার মতো ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
কারণ নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এই মিশনে ডল পুতুল পাঠাতে চায়। এর পেছনেও কারণ আছে। ভবিষ্যতে আর্টেমিস ৩ মিশনে মানুষ এই মডিউল ব্যবহার করে চাঁদে যাবে। তখন ওরিয়ন মডিউলে কোনো সমস্যার সম্মুখিন হতে হবে কিনা, তা যাচাই করে দেখতে চায় নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। মানবদেহের কম্পনের মাত্রা ও মহাকাশে বিকিরণের প্রভাব পরিমাপ করার জন্য ওরিয়ন স্পেসক্রাফটে পাঠানো হবে ওই ডল পুতুল।
৪২ দিন চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে ওরিয়ন স্পেসক্রাফটের ক্রু মডিউল আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে। ওরিয়নের মূল অংশ বা সার্ভিস মডিউল থেকে যাবে পৃথিবীর কক্ষপথে। ভবিষ্যতের চন্দ্রভিযানেও ব্যবহার করা যাবে এই মডিউল।
নাসার নেতৃত্বে পৃথিবীর ২১টি দেশের অর্থায়ন ও সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে এই অভিযান। আর্টেমিসের মূল লক্ষ্য, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, অর্থনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি করা এবং নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞানচর্চায় অনুপ্রাণিত করা। আর্টেমিস মিশনের মাধ্যমে পৃথিবী, চাঁদ এবং আমাদের সৌরজগতের উৎপত্তি ও ইতিহাস আরও নতুন তথ্য জানা যাবে।
২০২৪ সালে উৎক্ষেপণ করা হবে আর্টেমিস ২। এই মিশনের স্পেসক্রাফটে থাকবে নভোচারী। তাঁরা চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে। আর্টেমিস ৩ মিশনে মানুষ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। এই মিশনেই প্রথম কোনো নারী চাঁদে পা রাখবেন। ২০২৫ সালে উৎক্ষেপণ করা হবে আর্টেমিস ৩। ইতিমধ্যে ২০২৫ সালে চাঁদে অবতরণের সম্ভাব্য ১৩টি অঞ্চল শনাক্ত করেছে নাসা। তবে আর্টেমিস ১-এর সফলতার ওপর নির্ভর করছে আর্টেমিস ২ ও ৩-এর ভাগ্য।
এমকে