Image default
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নারী শিক্ষার্থীদের যৌন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ

যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগগুলো যথাযথভাবে নিষ্পত্তি করেনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দোষী ব্যক্তিকে সাজা দেওয়ার পরিবর্তে অভিযোগগুলো খারিজ করায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ বেশি তৎপরতা দেখিয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, গ্রাসগো এবং ওয়ারউইক।

আল জাজিরার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট (আই-ইউনিট) এর চালানো ওই তদন্তে দুইজন অধ্যাপককে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের সহকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা বলেছেন যে তারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে যৌন নিপীড়ন এবং মাতাল আচরণ করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-জাজিরার অনুসন্ধানী দল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষককে চিহ্নিত করেছে। এই দুই শিক্ষক নিজেদের পদ ও ক্ষমতা ব্যবহার করে একাধিক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে প্রাক্তন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে শিক্ষকতা করার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। দুই দফায় শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন সহকর্মী এমন অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে যৌন হয়রানির অভিযোগসহ অতিমাত্রায় মদ্যপান বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানাতে রাজি হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষকও আল-জাজিরাকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এটি আরও প্রকাশ করেছে যে,যেখানে দুজন ছাত্র ছাত্রী পড়ে সেখানেও ছাত্রী কে যৌন সুরক্ষা দিতে ব্যার্থ বিশ্ববিদ্যালয়

‘যৌন হয়রানীকারক হিসেবে ব্যক্তিগত কুখ্যাতি’

এই বছর ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে অর্জন করা অক্সফোর্ডে অ্যান্ডি অর্চার্ড নামে একজন অধ্যাপক আছেন যিনি অ্যাংলো স্যাক্সন পড়ান। তার পূর্বসূরিদের মধ্যে একজন ছিলেন জে আর আর টলকিয়েন, যিনি হবিট এবং লর্ড অফ দ্য রিংস লেখার সময় একই পদে ছিলেন।

অর্চার্ডের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল অক্সফোর্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবং সেখানেই ১৯৯০-র দশকে দুই নারী তাঁর নিপীড়নের শিকার হন। ওই দুই নারীও এখন অত্যন্ত সম্মানিত শিক্ষাবিদ।

তাদেরই একজন বর্তমানে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ফাইন আর্টের প্রধান অধ্যাপক ক্যাথরিন কার্কভ বলেন, ‘তার একাডেমিক খ্যাতি ছিল অনেক উচ্চ, তার ব্যক্তিগত খ্যাতি ছিল মদ্যপ এবং যৌন শিকারী। তিনি তার অফিসের পরিবর্তে মদের পাবে সভা করতেন, তাই তিনি মিটিংয়ের সময় অনেকবার মাতাল হয়ে পড়েছিলেন’।

ওই দুই নারীর আরেকজন লন্ডনের কিংস কলেজে বর্তমানে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক অনন্যা কবির তার পিএইচডি করার জন্য কেমব্রিজকে বেছে নিয়েছিলেন যাতে তাকে অর্চার্ডের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। অর্চার্ড মধ্যযুগ বিষয়ে একজন পণ্ডিত হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

তিনি বলেন, আরেকজন স্নাতকোত্তর নারী শিক্ষার্থী অর্চার্ডের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কের কথা স্বীকার করার পর অর্চার্ড সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল। ওই নারী শিক্ষার্থী তাকে বলেন যে, অর্চার্ডের সঙ্গে তিনি যৌন সম্পর্কে আছেন এবং ভবিষ্যত পরিণতির ভয়ে তা থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না।

কবির বলেন, ‘এই ধরণের সম্পর্ক দুঃস্বপ্নের মতো। এটি একটি সম্পূর্ণ অসম ক্ষমতার সম্পর্ক। আপনার পিএইচডি সুপারভাইজার হলেন আপনার পুরো পৃথিবী’।

Related posts

ভারতে কি বন্ধ হচ্ছে ফেসবুক-টুইটার?

News Desk

দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে চীন ও রুশ যুদ্ধবিমান

News Desk

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ

News Desk

Leave a Comment