Image default
আন্তর্জাতিক

যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত বাবার স্থলে ছেলে প্রেসিডেন্ট

মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদের প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবি মঙ্গলবার ‘সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে’ আহত হয়ে মারা যাওয়ার পর তার ছেলে মাহামাত কাকাকে দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছে সামরিক বাহিনীর ট্রান্সিশনাল কাউন্সিল।

ত্রিশ বছরের বেশি সময় ধরে ৬৮ বছর বয়সী ইদ্রিস দেবি ক্ষমতায় ছিলেন। ষষ্ঠবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরদিন আজ মঙ্গলবার দেশটির উত্তরাঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইরত সৈন্যদের দেখতে গিয়ে দুই পক্ষের লড়াইয়ের মধ্যে নিহত হন।

দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আজেম বেবমেনদাও আগৌনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। পরে তিনি আবারও এক বিবৃতি দিয়ে জানান যে, মিলিটারি ট্রান্সিশনাল কাউন্সিল দেবির ছেলে মাহামাত কাকাকে অন্তর্বতী প্রেসিডেন্ট মনোনীত করেছে।

১৯৯০ সালে চাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসা দেবি ছিলেন আফ্রিকা মহাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে অন্যতম। এর আগে তিনি একাধিকাবার সেনা অভ্যুত্থান ও বিদ্রোহীদের হত্যাচেষ্টার মুখ থেকে বেঁচে গেছেন।

গত ১১ এপ্রিল দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেবি ষষ্ঠবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে তার দমনমূলক শাসন ব্যবস্থার কারণে দেশটির বেশিরভাগ বিরোধী এই ভোট বর্জন করেছিল। আর নির্বাচিত হওয়ার পরদিন যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে তিনি নিহত হলেন।

মঙ্গলবার লিবিয়া সীমান্ত লাগোয়া দেশের উত্তরাঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে চলমান লড়াই পরিদর্শনে গিয়ে নিজে অস্ত্র হাতে তুলে নেন দেবি। এ সময় বিদ্রোহীদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার ছেলে মাহামাত কাকার নাম ঘোষণা করে সামরিক ট্রান্সিশনাল কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেছেন, চাদের জনগণকে শান্তি, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সব পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ট্রানজিশন।

চার-তারকা জেনারেল মাহামাতের নেতৃত্বে সামরিক কাউন্সিল আগামী দেড় বছর দেশ শাসন করবে। তবে অন্তর্বর্তী সময় শেষ হওয়ার পরই আবারও অবাধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে বর্তমানে ক্ষমতাসীন এই মিলিটারি কাউন্সিল।

চাদে ফ্রান্সের সামরিক সংশ্লিষ্টতা বিষয়ক ইতিহাসের লেখক নাথানিয়েল পাওয়েল বলেছেন, দেবির মৃত্যুর অর্থ চাদকে চরম এবং এক মারাত্মক অনিশ্চয়তায় ফেলে দিতে পারে। কারণ চাদের সেনা অভ্যন্তরীণভাবে বিভক্ত এবং দেশের অভ্যন্তরের বিভাজনও ব্যাপক।

ফ্রান্স এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তিগুলোর দীর্ঘদিনের বন্ধু ছিলেন ইদরিস দেবি। বিশেষ করে আফ্রিকায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর লড়াইয়ে প্রেসিডেন্ট দেবি ছিলেন তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ

যে যুদ্ধক্ষেত্রে দেবির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেটি প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় এ খবর নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে কিছু বিদেশি পর্যবেক্ষক কীভাবে একজন রাষ্ট্রপ্রধান এভাবে মারা যেতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

Related posts

ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরোধিতায় আয়ারল্যান্ড

News Desk

ওডিশায় তাণ্ডব চলছে ইয়াসের, মূল আঘাতে লন্ডভন্ডের শঙ্কা

News Desk

ইউক্রেন ইস্যুতে অবস্থান স্পষ্ট করলো ন্যাটো

News Desk

Leave a Comment