ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে ১১ দিনের হামলা শেষে যুদ্ধবিরতি চলছে। এর মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। মঙ্গলবার চারদিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে প্রথমে ইসরায়েলে পা রেখেছেন তিনি।
এই সফরে ব্লিনকেন ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর তিনি যাবেন পশ্চিম তীরের রামাল্লায়। সেখানে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠন করবেন ব্লিনকেন।
তবে এই দুই নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেই সফর শেষ নয়। এরপরেই তিনি যাবেন পার্শবর্তী দেশ মিসর ও জর্ডানে। সেখানে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যকার সংঘাত নিরসন নিয়ে নানা পরামর্শ করবেন তিনি। ১১ দিন পর যুদ্ধ বিরতিতে মিসরের মধ্যস্থতার জন্য দেশটিকে স্বাগতও জানানোর কথা রয়েছে তার।
হঠাৎ করেই কেন এমন সফরের সিদ্ধান্ত নিল যুক্তরাষ্ট? ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের পেছনে মার্কিন সমর্থন রয়েছে। রয়েছে অস্ত্র ও মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহযোগিতা। এধরনের নানা অভিযোগ রয়েছে মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন মার্কিন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ব্লিনকেনের এই সফর আপাতত কিছুদিনের জন্য মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার সমাধান করতে পারে। তবে এ সমস্যার মূল রয়েছে আরও গভীরে। সেখান থেকে সমাধান করতে হবে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ৩৮০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে ইসরায়েলকে দীর্ঘমেয়াদী যে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার অধীনেই এই সহায়তা গেছে। আর এই সহায়তার প্রায় পুরোটাই ছিল সামরিক সাহায্য।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামা ইসরায়েলের সঙ্গে এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন যার অধীনে ২০১৭-১৮ সাল থেকে তার পরবর্তী ১০ বছর ইসরায়েল ৩৮ বিলিয়ন ডলার বা ৩৮০০ কোটি ডলার সামরিক সাহায্য পাবে। তার আগে দশ বছরের তুলনায় ঐ সাহায্য বেড়েছে প্রায় ছয় শতাংশ।
এছাড়া গত বছর ইসরায়েলে নতুন অভিবাসীদের পুনর্বাসনে যুক্তরাষ্ট্র ৫০ লাখ ডলার সাহায্য দিয়েছে। বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে ইহুদিরা ইসরায়েলে গিয়ে বসতি গড়তে চাইলে তাকে স্বাগত জানানোর নীতি বহুদিন ধরেই সেদেশে রয়েছে।
ইসরায়েলকে অত্যাধুনিক একটি সামরিক শক্তিধর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে সাহায্য করছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র কেনার জন্য তহবিল যোগানো হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫০টি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনেছে যা দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো যায়।