বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজেদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের সঙ্গে ক্যামেরুনের খেলা চলছে। বড় পর্দায় প্রিয় দলের খেলা দেখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভিড় করেছেন ব্রাজিল সমর্থকেরা। এ নিয়ে ছবির গল্প:
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে শর্ত, আলোচনায় বসতে হলে ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। বাইডেনের এই শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। ক্রেমলিন বলেছে, এখনই সেনা প্রত্যাহার সম্ভব নয়। তবে আলোচনা চলতে পারে, যদি ইউক্রেনে রুশ অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে স্বীকৃতি দেয় ওয়াশিংটন। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের ১০ মাস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আলোচনায় বসার কথা বলেছিলেন। তিনি জানান, রাশিয়া পশ্চিমাদের সঙ্গেও আলোচনায় ফিরতে ইচ্ছুক।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা নিয়ে কথা বলেন বাইডেন। ওয়াশিংটন সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার বিষয়ে এখনই তাঁর কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে যোগাযোগের সম্ভাবনা তিনি খোলা রেখেছেন।
বাইডেন আরও বলেন, ‘আমি পুতিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রস্তুত, যদি বাস্তবিক অর্থে তাঁর মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগ্রহ থাকে যে তিনি যুদ্ধ শেষ করার উপায় খুঁজছেন। তবে তিনি এখনো তা করেননি।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, যদি তেমনটা হয়, তাহলে তিনি তাঁর ফরাসি ও ন্যাটো বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন।
সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, ‘এই যুদ্ধ শেষ করার একটা যুক্তিসংগত উপায় আছে। আর তা হলো পুতিনকে প্রথমেই ইউক্রেন থেকে রুশ বাহিনীকে সরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু তিনি তা করবেন বলে মনে হয় না। ইউক্রেনের হাসপাতাল, শিশুযত্ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা ফেলছে রাশিয়া। ইউক্রেনে পুতিন যা করছেন, তা অসুস্থতা।’
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার মস্কোয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের কাছে জো বাইডেনের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। পেসকভ বলেন, ‘বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করা হলে তিনি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু এখনই এটা সম্ভব নয়। আপাতত এই শর্ত মানতে মস্কো প্রস্তুত নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
পেসকভ আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষা করে যেকোনো আলোচনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। আমরা মনে করি, রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষার সবচেয়ে কার্যকর কৌশল কূটনৈতিক আলোচনা এগিয়ে নেওয়া। তবে এই আলোচনা কঠিন হতে পারে। কেননা গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলোকে ওয়াশিংটন এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। এসব অঞ্চলকে স্বীকৃতি দিতে হবে।’
গত সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ায় গণভোট আয়োজন করে রাশিয়া। এর মধ্য দিয়ে এই চার অঞ্চল নিজেদের অংশ করে নেয় মস্কো। যদিও ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এই গণভোটকে স্বীকৃতি দেয়নি।
বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় অধিকৃত চার অঞ্চলের স্বীকৃতিকে কূটনৈতিক কৌশল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে রাশিয়া।
এদিকে আজ পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। এ বিষয়ে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের কৌশল ‘ধ্বংসাত্মক’ ছিল বলে ফোনালাপে শলৎজকে জানিয়েছেন পুতিন। একই সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে বার্লিনের কৌশল বদলানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ ১০ মাসে গড়িয়েছে। তবে এ সময়ে কাঙ্ক্ষিত অর্জন পায়নি দুই পক্ষের কেউই। মাঝে প্রাণহানি ঘটেছে হাজারো মানুষের। উদ্বাস্তু হয়েছেন লাখ লাখ ইউক্রেনীয়। সংকটে পড়েছে ইউক্রেন-রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি। অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বে দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর ও সম্মানজনক উপায় খোঁজা হচ্ছে।