ঋষি সুনাক
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতা ঋষি সুনাক। বরিস জনসন ও পেনি মর্ডান্ট দুজনেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়ায় তার সামনে এখন আর কোনো বাধা রইলো না। অনেকগুলো রেকর্ড গড়ে যুক্তরাজ্যের নতুন সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন তিনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার তথ্যমতে, প্রথম অশ্বেতাঙ্গ, প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত এবং প্রথম হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতা হিসেবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হবেন ঋষি। এছাড়া বিগত ২০০ বছরের মধ্যে দেশটির কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রীও হতে চলেছেন তিনি। খবর বিবিসি, আল-জাজিরার।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্যের ৫৭তম এবং ১৮১২ সালের পর থেকে কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রী হবেন ঋষি সুনাক। আধুনিক যুগে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দ্রুততম সময়ে প্রধানমন্ত্রীর পদে পৌঁছানোর রেকর্ডও গড়তে চলেছেন। এজন্য সুনাক সময় নিচ্ছেন মাত্র সাত বছর। রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ পাওয়া প্রথম ব্যক্তিও হতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ নেতা। অর্থাৎ, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ পরবর্তী যুগে শপথ নেয়া প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হবেন ঋষি।
১৯৮০ সালে দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটনে ৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাক জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা যশবীর সুনাকের জন্ম কেনিয়ায়। তার মা ঊষা সুনাক জন্মগ্রহণ করেন তৎকালীন তাঙ্গানিকায়, যা বর্তমানে তানজানিয়ার অংশ।
ঋষির দাদা-দাদি ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন ও ১৯৬০ এর দশকে সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে পূর্ব আফ্রিকা থেকে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। যশবীর সুনাক যুক্তরাজ্যে একজন জিপি (জেনারেল প্র্যাকটিশনার) হিসেবে ও ঊষা সুনাক ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করতেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে ঋষি সুনাকই সবার বড়।
তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় যুক্তরাজ্যের রমসি, হ্যাম্পশায়ারের স্ট্রউড স্কুলে। এরপর উইনচেস্টার কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়ালেখা করেন তিনি। অক্সফোর্ডের লিঙ্কন কলেজে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ঋষি। ২০০১ সালে তিনি প্রথম স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ফুলব্রাইট স্কলার হিসেবে এমবিএ করেন। ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি ও ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তির জামাতা ঋষি সুনাক। নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতার সঙ্গে বিয়ে হয় তার।
প্রথমবারের মতো ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ড আসন থেকে ২০১৫ সালে এমপি নির্বাচিত হন ঋষি সুনাক। থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হলে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ঋষি।
এনজে