ছবি: সংগৃহীত
কোটি কোটি একরজুড়ে বিস্তৃত আমাজন জঙ্গলের বেশির ভাগ জায়গায় এখনো কোনো মানুষ পৌঁছায়নি। রহস্যে ভরা এই জঙ্গল নয়টি দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে রয়েছে। এই জঙ্গলে এমন প্রজাতির পশুপাখি, গাছগাছালি রয়েছে, যাদের সম্পর্কে আমাদের এখনো কোনো ধারণা নেই।
পেরুসংলগ্ন এই আমাজনের একটি অংশে নদী রয়েছে, যেখানে অবিরাম পানি ফুটছে। একে বলা হয় ‘ফুটন্ত নদী’। বিজ্ঞানীরা এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম থার্মাল রিভার বলে মনে করছেন। এই নদীর পানি ফুটছে কেন, তার কারণ বোঝার চেষ্টা করছেন তারা।
এই নদীটি ২০১১ সালে ভূতত্ত্ববিদ আন্দ্রে রুজো আবিষ্কার করেছিলেন। আন্দ্রে রুজো ফুটন্ত নদী আবিষ্কারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। এটি মায়ানতুইয়াকু নদী নামেও পরিচিত। আসলে আন্দ্রে ছোটবেলায় দাদুর কাছ থেকে ফুটন্ত নদীর গল্প শুনতেন। আন্দ্রে নিশ্চিত ছিলেন, লোককাহিনীতে যদি এটি উল্লেখ করা হয়, তবে বাস্তবে এমন একটি নদী অবশ্যই থাকবে।
নদীর সন্ধানে বেরনোর আগে বিজ্ঞানীরা তাকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, আমাজনে এমন কোনো নদী থাকতে পারে না। কারণ এই জঙ্গল কোনো জীবন্ত আগ্নেয়গিরি থেকে অনেক দূরে। এরপরও আন্দ্রে অনুসন্ধান করতে বের হন। তখন তিনি টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছিলেন। এটা ২০১১ সালের ঘটনা। আমাজনের গভীরে যাওয়ার সময় আন্দ্রে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন।
এরপর চার মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত এই নদীর হদিস পান আন্দ্রে। পেরুর জনজাতি আশানুনকা ওই নদীর পাশে বসতি স্থাপন করেছিল। মায়ানতুইয়াকু নামটা তাদেরই দেয়া। তারা এই নদীকে পবিত্র মনে করেন।আন্দ্রে জানিয়েছিলেন, নদীর পানি এতটাই গরম যে, এক মিনিট আঙুল ডুবিয়ে রাখলে পুড়ে যেতে পারে।
‘দ্য বয়লিং রিভার : আমাজন অ্যাডভেঞ্চার এন্ড ডিসকভারি’ নামক বইতে আন্দ্রে এই নদীর কথা লিখেছেন।
এসএম