করোনাভাইরাস মহামারির বিপদ এখনো কাটেনি। এরপরও যেসব দেশ জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে তাড়াহুড়ো করে বিধিনিষেধ শিথিল করছে, এজন্য তাদের বড় মূল্য দিতে হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির জরুরি কর্মসূচি বিভাগের প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, হয়তো বিশ্বের কোনো কোনায় সংক্রমণের আরেকটি ঢেউ অপেক্ষা করছে এবং পৃথিবীর বেশির ভাগ জায়গার জন্য এই মহামারি মাত্র শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আমেরিকার সব দেশ মিলিয়ে এখনো প্রতি সপ্তাহে ১০ লক্ষাধিক রোগী পাচ্ছি। একই অবস্থা ইউরোপেও সপ্তাহে পাঁচ লাখের বেশি রোগী। বিষয়টা এমন নয় যে, সেটি (মহামারি) চলে গেছে। এটি এখনো শেষ হয়নি। এর আগে গত সপ্তাহে ডব্লিউএইচও আফ্রিকার পরিচালক সতর্ক করে বলেছিলেন, মহাদেশটিতে মহামারির তৃতীয় ঢেউয়ের যে গতি ও বিস্তার দেখা যাচ্ছে, তা অভূতপূর্ব। তার কথায়, মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতে করোনা রোগী প্রতি চার সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়েছিল, এখন তা হচ্ছে মাত্র তিন সপ্তাহে।
এদিকে মঙ্গলবার রাশিয়ায় করোনায় দৈনিক মৃত্যু নতুন রেকর্ড গড়েছে। এদিন সেখানে অন্তত ৭৩৭ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। গত মাসের তুলনায় দেশটিতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও দ্বিগুণের বেশি। গত জুনে রাশিয়ায় দৈনিক নয় হাজারের মতো মানুষ করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলেও চলতি সপ্তাহে তা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্বজুড়ে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহ বিস্তারের মধ্যেই নতুন করে এই হুঁশিয়ারি দিল ডব্লিউএইচও। গত এপ্রিলে করোনার অধিক সংক্রামক এ ধরনটি প্রথমবার ভারতে শনাক্ত হয়। ইতোমধ্যে সেটি শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাজ্যে নতুন শনাক্ত রোগীদের ৯০ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ৩০ শতাংশ করোনা রোগীর অসুস্থতার জন্য ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দায়ী বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারির ভয়াবহ থাবা থেকে বাঁচতে কোনো দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অন্তত ৮০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনতে হবে।