‘এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক, বিশেষ করে চেয়ারম্যান হিসেবে যখন একজন ক্রিকেটার আছে। আমাদের ক্রিকেটের জন্য ভালো বিজ্ঞাপন নয় এটি। ক্রিকেট-জাতি হিসেবে আমরা এর চেয়ে উন্নত।’
দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নবিরতির সময় রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের উইকেট নিয়ে এমন বলেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও এখন পিসিবির চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। আপাতত অবশ্য সেটি নিয়ে ভাবার হয়তো খুব একটা সময় নেই পাকিস্তানের দুই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হকের।
ইংল্যান্ডের ৬৫৭ রানের জবাবে তাঁদের অবিচ্ছিন্ন ওপেনিং জুটিতে পাকিস্তান তুলে ফেলেছে ১৮৭ রান। ইমাম অপরাজিত আছেন ৮৯ রান করে, শফিকের রান ৯০। ১৮৭ রান তুলতে পাকিস্তান অবশ্য খেলেছে ৫১ ওভার। ঠিক ‘বাজবল’ না হলেও এ টেস্টে চিরায়ত ওই ব্যাটিংই যে কার্যকরী, তা আলাদা করে না বললেও চলছে।
৭৫ ওভারে রেকর্ড ৫০৬ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করা ইংল্যান্ড অবশ্য দ্বিতীয় দিনও ভেঙেছে রেকর্ড। ১০১ ওভারে তারা তুলেছে ৬৫৭ রান, মানে প্রতি ওভারে এসেছে ৬.৫০ করে রান। টেস্টে কমপক্ষে ১০০ ওভারের ইনিংসে এখন এটিই সর্বোচ্চ, আগের সর্বোচ্চ ছিল শ্রীলঙ্কার—২০০১ সালে ৫.৩৬ হারে তারা তুলেছিল ৫৫৫ রান। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ স্কোর, পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চও।
দিনের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে নাসিম শাহর বলে বোল্ড হন অধিনায়ক বেন স্টোকস, ১৮ বলে ৪১ রান করে। অভিষিক্ত লিয়াম লিভিংস্টোনও তেমন কিছু করতে পারেননি, নাসিমকে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ১০ বলে ৯ রান।
প্রথম দিন ১০১ রানে অপরাজিত হ্যারি ব্রুক অবশ্য ঝড় তুলেছেন ঠিকই। মাত্র ১১৫ বলেই ১৫০ ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের এটি দ্রুততম ১৫০ রানের রেকর্ড, সব মিলিয়ে চতুর্থ দ্রুততম। এ ইনিংসের পথে জাহিদ মাহমুদের করা ৮৩তম ওভারে ২৭ রান তুলেছেন ব্রুক। টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে খরুচে ওভার আছে মাত্র চারটি। তবে কোনো ইংলিশ ব্যাটসম্যান এর আগে ১ ওভারে এত রান তোলেননি। প্রথম দিন জাহিদকেই ১ ওভারে ৬টি চার মেরেছিলেন ব্রুক।
ইংল্যান্ডের রেকর্ডময় ইনিংসে অভিষেকটা ভুলে যাওয়ার মতোই গেছে পাকিস্তান লেগ স্পিনার জাহিদের। ৪ উইকেট নিলেও ৩৩ ওভারে ২৩৫ রান দিয়েছেন। অভিষেকে এখন এটিই সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড, আগের রেকর্ডটি ছিল শ্রীলঙ্কার সুরজ রনদিভের—২২২ রানে ২ উইকেট।
ব্রুককেও থামিয়েছেন নাসিমই। ১১৬ বলে ১৫৩ রান করার পর তিনিও ক্যাচ দিয়েছেন ডিপ স্কয়ার লেগে। অষ্টম উইকেটে উইল জ্যাকস ও ওলি রবিনসন এরপর যোগ করেন ৬৫ রান। জ্যাকসকে ফিরিয়েছেন আরেক অভিষিক্ত মোহাম্মদ আলী। ৩ উইকেট নিয়েই থামেন নাসিম। পাকিস্তান ফাস্ট বোলার সব কটি উইকেটই নিয়েছেন আজ।
রাওয়ালপিন্ডির এমন পিচে উইকেট নিতে পেসারদের গতি সবচেয়ে বড় ভরসা, সেটিও বোঝা যায় তাতে। তবে জেমস অ্যান্ডারসন, ওলি রবিনসনরা ঠিক গতিময় পেসার নন। ইমাম-শফিকের বিপক্ষে ঠিক সুবিধা করতে পারেননি ইংলিশ স্পিনাররাও।