শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। ফাইল ছবি
অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জেরে জ্বলছে শ্রীলঙ্কা। জনরোষ এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এর মধ্যেই আজ দ্বীপরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তার আগে শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমাদাসা বিপর্যস্ত দেশের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানালেন ভারতকে।
শ্রীলঙ্কার অন্যতম বিরোধী দল সামাগি জানা বালাওয়েগায়ার শীর্ষ নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। তিনি মঙ্গলবার টুইট করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের কাছে আমার বিনীত ও আন্তরিক অনুরোধ, যিনিই শ্রীলঙ্কার নতুন রাষ্ট্রপতি হোন, আপনারা যেন মা লঙ্কাকে সাহায্য করেন, পাশে দাঁড়ান। সূত্র: খবর প্রতিদিন।
জ্বালানি ও খাদ্যের অভাবে গত কয়েক মাস ধরেই চরম সংকটে শ্রীলঙ্কা। এই অবস্থায় ভয়ংকর আকার ধারণ করে জনরোষ। রাষ্ট্রপতি ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দখল নেয় সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি আন্দাজ করে রাজপ্রাসাদ ছাড়েন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে। বর্তমানে তিনি মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতি পদ ছাড়েন। রাজপক্ষে পরিবারের একাধিক সদস্য শ্রীলঙ্কার সরকারের বিভিন্ন পদে ছিলেন। বিরোধী ও প্রতিবাদীদের অভিযোগ, তাদের একাধিক ভুল সিদ্ধান্তে আজ শ্রীলঙ্কা এই হাল।
দ্বীপরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বুধবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সবচেয়ে এগিয়ে রনিল বিক্রমাসিংহে, যিনি ছয়বারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিও বটে। যদিও রাজাপক্ষের কাছের লোক হওয়ায় প্রতিবাদীদের অপছন্দের মানুষ। রনিলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমা। যিনি রাজপক্ষে, বিক্রমাসিংহেদের কঠোর সমালাচক বলেই পরিচিত। শ্রীলঙ্কার এক সময়ের নামী সাংবাদিক দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমা নির্বাচনে দাঁড়ানোয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সাজিথ প্রেমাদাসা।
মঙ্গলবারও শ্রীলঙ্কার আর্থিক সংকটের ভয়াবহ রূপ প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, সংসার চালাতে দেহ ব্যবসায় নামছেন নারীরা। রাজধানী কলম্বোয় ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে নিষিদ্ধপল্লী। শ্রীলঙ্কার চরম আর্থিক সংকটে পরিবারকে বাঁচাতে নিষিদ্ধ এই পেশাকেই আঁকড়ে ধরছেন নারীরা। শুধু টাকা নয়, প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ওষুধ কিনতে শরীর বিক্রি করছেন তারা। এখন দেখার কে বাঁচাতে পারে দেউলিয়াগ্রস্ত শ্রীলঙ্কাকে।