স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রাণঘাতী এইডস রোগ নিরাময় সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই রোগের জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত এক নারীর লিউকেমিয়া (রক্তস্বল্পতা) চিকিৎসার জন্য স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল।
এতে ওই ভাইরাসের কার্যক্ষমতা কমে গেছে। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওই নারী এখন পর্যন্ত স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এইচআইভি থেকে সেরে ওঠা প্রথম নারী ও বিশ্বের তৃতীয় ব্যক্তি।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, এ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে কোনো অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি ব্যবহার ছাড়াই আরও বেশি মানুষের কাছে স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের বিষয়টি পৌঁছানো যাবে।
এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত নারীর লিউকেমিয়া (রক্তস্বল্পতা) চিকিৎসার জন্য স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের ঘটনাটি গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভারের রেট্রোভাইরাসেস অ্যান্ড অপরচ্যুনিসটিক ইনফেকশন সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।
এইচআইভি রোগী নিয়ে কাজ করা সংস্থা এইডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট শ্যারন লিউইন বলেন, ‘এ ধরনের সেরে ওঠার ঘটনা তৃতীয়বারের মতো ঘটল। আর কোনো নারীর ক্ষেত্রে এটাই প্রথম।’
এর আগে স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এইচআইভি থেকে সেরে ওঠা দুজনই ছিলেন পুরুষ। তাঁদের ক্ষেত্রে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে প্রাপ্তবয়স্ক স্টেম সেল ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এবারে নাভিরজ্জুর রক্ত ব্যবহার করা হয়।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। তাঁরা ক্যানসার এবং অন্যান্য গুরুতর অবস্থার চিকিৎসার জন্য স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, এমন ২৫ রোগী পর্যবেক্ষণ করেন।
পর্যবেক্ষণে থাকা রোগীদের প্রথমে ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। এরপর নির্দিষ্ট জেনেটিক মিউটেশনসহ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ট্রান্সপ্ল্যান্ট স্টেম সেল গ্রহণ করে তা প্রতিস্থাপন করা হয়। এতে রোগীর শরীরে এইচআইভি প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়।
এইচআইভি ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত করা হয় ১৯৮১ সালে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং নিউমোনিয়া বা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।