তাইওয়ানের ওপর বলপ্রয়োগের অধিকার চীনের আছে, তবে বেইজিং শান্তিপূর্ণভাবেই সংকট সমাধানের চেষ্টা করবে, বলেছেন তিনি।
বিশৃঙ্খলা থেকে শাসনের আওতায় এনে হংকংয়ে বিস্তৃত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
রোববার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সাধারণত প্রতি ৫ বছর পরপর চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কংগ্রেস হয়; এবারের কংগ্রেসে শি তৃতীয় মেয়াদে দলের শীর্ষ কর্মকর্তার পদে আসবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
শি তার বক্তব্যে আরও বলেছেন, তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধেও চীন বড় ধরনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
বেইজিং আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরোধিতা রুখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং সক্ষম, বলেছেন তিনি।
উদ্বোধনী ভাষণে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, তাইওয়ান ইস্যুর সমাধান কীভাবে হবে, তা চীনের উপর নির্ভর করছে।
তাইওয়ানের ওপর বলপ্রয়োগের অধিকার চীনের আছে, তবে বেইজিং শান্তিপূর্ণ সমাধানেরই চেষ্টা করবে, বলেছেন শি।
চীন গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে তার একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে। তাইপে চীনের এ দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, কেবল তাইওয়ানের জনগণেরই স্বশাসিত দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নিয়ে বলার অধিকার রয়েছে।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইপে সফরের পর চলতি বছরের অগাস্টে চীন তাইওয়ানের কাছে বড়সড় যুদ্ধমহড়া চালালে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে।
বড় আকারে মহড়া না চালালেও চীন এখনও স্বশাসিত দ্বীপটির আশপাশে ছোট আকার মহড়া ও সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সিপিসির ২০তম কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় শি বলেন, চীন সবসময়ই তাইওয়ানের জনগণকে সম্মান করে আসছে, যত্ন করছে, নানান সুযোগসুবিধা দিচ্ছে; বেইজিং তাইওয়ান প্রণালীজুড়ে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়েও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
“তাইওয়ান ইস্যুর সমাধান চীনা জনগণের একান্ত বিষয় এবং কী করা হবে, তাও চীনের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলনের সম্ভাবনা সৃষ্টিতে জোর দিচ্ছি, তবে কখনোই আসরা বল প্রয়োগ করা হবে না এমন প্রতিশ্রুতি দেবো না, প্রয়োজনে সব ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখি আমরা,” বলেছেন শি।
বিদেশি শক্তির ‘হস্তক্ষেপ’ এবং তাইওয়ানের বিপুল জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে অল্প সংখ্যক বিচ্ছিন্নতাবাদী আছে তাদের জন্যই ওই বল প্রয়োগের বিকল্পটি রাখা হয়েছে, বলেছেন তিনি।
“পুনরেকত্রীকরণ ও পুনরুত্থানের ঐতিহাসিক চাকা পুর্নদ্যমে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। মাতৃভূমির সম্পূর্ণ পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে, অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে,” তুমুল করতালির মধ্যে বলেন সিপিসির এ সাধারণ সম্পাদক।
গত সপ্তাহে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন চীনের সঙ্গে যুদ্ধের পরিকল্পনা নেই জানিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
কিন্তু চীন তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়, তারা তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিবেচনা করে।
বেইজিং তাইওয়ানকে হংকংয়ের আদলে ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থার’ অধীনে স্বায়ত্তশাসন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাইওয়ানের সব প্রচলিত রাজনৈতিক দলই এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাইওয়ানের জনগণও এই প্রস্তাবের পক্ষে নয় বলে একাধিক জনমত জরিপে দেখা গেছে।