Image default
আন্তর্জাতিক

অমিক্রনের একটি উপধরন মারাত্মক হতে পারে: গবেষণা

করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন অমিক্রনের একটি উপধরন বিএ.২ নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানালেন গবেষকেরা। তাঁরা বলেছেন, এই উপধরন করোনার অন্য ধরনের চেয়েও দ্রুত ছড়ায়। এটি গুরুতর অসুস্থতার কারণও হতে পারে। এই উপধরন ঠেকাতে বর্তমান অমিক্রনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ কার্যকর না-ও হতে পারে। জাপানের পরীক্ষাগারে করা নতুন এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএ.২ উপধরনটিতে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ডেলটাসহ করোনার পুরোনো ধরনগুলোর মতো রোগীদের গুরুতর অসুস্থ করে ফেলতে পারে। অমিক্রনের মতো এই উপধরন টিকাদান থেকে তৈরি রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকেও ফাঁকি দিতে পারে। তবে আশার কথা, বুস্টার ডোজ এ ক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে। বুস্টার নিলে আক্রান্ত ব্যক্তির অসুস্থতা ৭৪ শতাংশ কম হতে পারে।

ওই গবেষণায় দেখা গেছে, অমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বর্তমান ব্যবহৃত ওষুধ মনোক্লোনাল, সোট্রোভিমাবসহ অন্যান্য ওষুধ প্রতিরোধী বিএ.২। গবেষণাটির ফলাফল পিয়ার রিভিউয়ের আগে তার তথ্য গত বুধবার বায়োআরক্সিভ সার্ভারে পোস্ট করা হয়েছে। সাধারণত চিকিৎসা সাময়িকীতে গবেষণাটি প্রকাশের আগে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নের জন্য এই সার্ভারে গবেষণার তথ্য প্রকাশ করা হয়। এরপর অনেক বিশেষজ্ঞ সেটা মূল্যায়ন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ড্যানিয়েল রোডস সেই বিশেষজ্ঞদের একজন। গবেষণাটি মূল্যায়নের পর তিনি বলেন, মানুষের জন্য অমিক্রনের প্রথম উপধরন বিএ.১-এর চেয়েও খারাপ ভাইরাস হতে পারে বিএ.২। এটি অন্য ধরনের চেয়ে অনেক দ্রুত ছড়ায় এবং মানুষকে অসুস্থ করে ফেলে।

চীনের উহানে শনাক্ত হওয়া করোনার মূল ভাইরাসটির তুলনায় বিএ.২ উপধরন অনেক বেশি রূপান্তরিত (মিউটেশন) হয়েছে। এই উপধরনে কয়েক ডজন জিনেরও পরিবর্তন ঘটেছে, যা অমিক্রনের আসল ধরনের চেয়ে আলাদা রূপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গবেষণা পরিচালনা করেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কেই সাটো। তিনি বলেন, বিএ.২ উপধরনটিকে অমিক্রনের একটি সাধারণ ধরন হিসেবে মনে করা ঠিক হবে না। এটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সিএনএনকে তিনি আরও বলেন, বিএ.২ উপধরনটিকে ছদ্মবেশী অমিক্রন বলা যেতে পারে। কারণ, এটি পিসিআর টেস্টে ধরা পড়ে না। এটি শনাক্তে বাড়তি পদক্ষেপ নিতে হয়।

বিএ.২ উপধরনটি এতটাই শক্তিশালী হিসেবে মনে করে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ডেবোরাহ ফুলার বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে, করোনার এ ধরনের নতুন একটি নাম খুঁজতে হবে।’

গবেষকেরা মনে করছেন, অমিক্রনের চেয়েও এর উপধরন বিএ.২টি ৩০-৫০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। এটি বিশ্বের ৭৪টি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭টি রাজ্যে পাওয়া গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিভাগের ধারণা, কোভিড-১৯ আক্রান্ত আমেরিকানদের প্রায় ৪ শতাংশ বিএ.২ সংক্রমণে আক্রান্ত। তবে বিশ্বের অন্য দেশে ধরনটির সংক্রমণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের ১০টির অধিক দেশে এখন বিএ.২ ধরনটির সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ, ব্রুনেই, চীন, ডেনমার্ক, গুয়াম, ভারত, মন্টেনিগ্রো, নেপাল, পাকিস্তান ও ফিলিপাইন।

Related posts

৭৫ বছর পর পাকিস্তানি মুসলিম বোনের সঙ্গে ভারতীয় শিখ ভাইদের সাক্ষাৎ

News Desk

ইরাকে জ্বালানি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণে নিহত ১৫

News Desk

শি জিংপিংয়ের সঙ্গে দেখা করছেন পুতিন

News Desk

Leave a Comment