Image default
আন্তর্জাতিক

অস্ত্রবিরতির পর প্রথম সাহায্য পৌঁছাল গাজায়

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর প্রথম মানবিক সহায়তা গাজায় পৌঁছেছে। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িঘরে ফিরে এসেছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, এগুলো পুননির্মান করতে কয়েক বছর লেগে যাবে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করার জন্য করিডোর তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ইসরায়েল কেরেম শালম ক্রসিং খুলে দেয়ার পর জাতিসংঘের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো ছাড়াও বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার ট্রাক অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাদ্য ও জ্বালানি নিয়ে গাজায় প্রবেশ করছে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, সহিংসতার কারণে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। প্রায় ৮ লাখ মানুষ পাইপের মাধ্যমে পানি পাওয়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

দরিদ্র এই অঞ্চলটি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা পুননির্মান করতে কয়েক কোটি ডলারের বেশি অর্থ দরকার হবে বলে মনে করছেন ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস গাজায় অতিদ্রুত স্বাস্থসেবা উপকরণ ও চিকিৎসক পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ আহত হওয়ায় গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অনেক বছর ধরে গাজায় মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের পথ আটকে রেখেছে ইসরায়েল ও মিসর। দুই দেশেরই দাবি, এর ফলে হামাসের কাছে অস্ত্র পৌঁছানোর ঝুঁকি তৈরি হবে।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষকে চিহ্নিত করে সহায়তা প্রদান করা। এজন্য সংস্থাটি ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা চেয়েছে।

বৃহস্পতিবার গাজার আবাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ১ হাজার ৮০০টি আবাসন ইউনিট বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে এবং ১ হাজার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।

রেড ক্রসের মধ্যপ্রাচ্যের পরিচালক ফ্যাব্রিজিও কারবোনি বলেন, ‘দুই সপ্তাহের কম সময়ে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পুননির্মান করতে কয়েক বছর সময় লাগবে।’

গাজার অধিবাসী সামিরা আবদাল্লাহ নাসের বলেন, বেইত হানুনের কাছে তার দ্বিতল বাড়িটি ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাড়িতে ফিরে এসেছি এবং আমাদের কোনো বসার জায়গা নেই, আমাদের পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, বিছানা নেই, আমাদের কিছুই নেই।’

গত ১০ মে শুরু হওয়া এই সংঘাতে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় অন্তত ২৪৮ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শতাধিক নারী ও শিশুও রয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে তারা হামাসের অন্তত ২২৫ জন সদস্যকে হত্যা করেছে। তবে হামাস তাদের হতাহত যোদ্ধাদের সম্পর্কে কিছু জানায়নি।

হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে।

ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি উভয় সম্প্রদায়ই যুদ্ধবিরতিতে উল্লাস করেছে। তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, সেখানে আবার সংঘর্ষ তৈরি হওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার।

Related posts

গত বছর ইসরায়েলকে ৩৮০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

News Desk

অস্ত্র যখন ‘পণ্য’ হয় যুদ্ধ তখন বিজ্ঞাপন

News Desk

রুশ হামলায় খেরসন থেকে পালাচ্ছে নাগরিকরা

News Desk

Leave a Comment