ইন্দোনেশিয়ায় সোমবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিন পশ্চিম জাভা অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানা এই কম্পনে আহত হয়েছে আরও শতাধিক মানুষ। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স ২৪।
শক্তিশালী কম্পনের ফলে লোকজন তাদের বাড়িঘর থেকে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ে। এ সময় অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কাউকে কাউকে বমি করতে দেখা যায়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। এটির কেন্দ্রস্থল ছিল পশ্চিম জাভা প্রদেশের সিয়ানজুর অঞ্চলের ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। তবে সুনামির কোনও আশঙ্কা নেই।
কেন্দ্রস্থল পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর অঞ্চলে হলেও বৃহত্তর জাকার্তা অঞ্চলেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস।
সিয়ানজুর অঞ্চলের একজন কর্মকর্তা হারমান সুহেরম্যান এখন পর্যন্ত ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে তাদের বেশিরভাগেরই নির্দিষ্ট একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পে হতাহতের পাশাশি অন্তত কয়েক ডজন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল এবং একটি হাসপাতালও রয়েছে। ধসে পড়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণ জাকার্তার বাসিন্দা ভিদি প্রিমধানিয়া বলেন, ‘কম্পনটি খুব শক্তিশালী ছিল। আমার সহকর্মীরা এবং আমি জরুরি সিঁড়ি ব্যবহার করে নবম তলায় অবস্থিত আমাদের অফিস থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।’ তার অফিস ভবনের দেয়াল এবং ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’ অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় ইন্দোনেশিয়া প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত প্রত্যক্ষ করে। ২০০৪ সালে সুমাত্রা উপকূলে ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্প ও এরপরের সুনামিতে এই অঞ্চলজুড়ে দুই লাখ ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় মারা যায় এক লাখ ৭০ হাজার মানুষ। ২০১৮ সালে লম্বক দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৫৫০ জনের মৃত্যু হয়। গত বছর সুলাওসি দ্বীপে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প এবং পরবর্তী সুনামিতে চার হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়।