রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে চীন। মঙ্গলবার দৃশ্যত তারা নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকলেও বুধবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা দেয়ার এই ধারা অনুসরণ করবে না চীন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তির এই পদক্ষেপ কখনোই মৌলিক এবং কার্যকর সমাধানের উপায় হতে পারে না। চীন পরিষ্কার করে বলেছে, সব সময়ই একতরফা অবৈধ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে যাবে তারা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অভিজাতদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা দোনেৎস্ক এবং দুহানস্কে সেনাদের পাঠানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।
এরপরই বাইডেন ওই ঘোষণা দিয়েছেন। জবাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে বৃটেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে।
এই ধারা চীন অনুসরণ করবে কিনা? চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা। জবাবে মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেছেন, চীনা সরকারের নীতির মৌলিকত্ব অনুধাবনে আপনার ঘাটতি আছে। এটা স্পষ্ট। আমরা বিশ্বাস করি, সমস্যা সমাধানের জন্য নিষেধাজ্ঞা কখনোই মৌলিক এবং কার্যকর উপায় হতে পারে না। একতরফা যেকোনো অবৈধ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে চীন। তিনি বলেন, এ জন্য উভয় পক্ষকে আলোচনা এবং সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে।
এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞায় কি অর্জন হয়েছে, এ প্রশ্ন করেন হুয়া চুনিং। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, আপনারা কি সমস্যার সমাধান করতে পেরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব কি ভাল অবস্থায় আছে? রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া নিষেধাজ্ঞা কি ইউক্রেন সমস্যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাধান করে ফেলবে? রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ফলে ইউরোপের নিরাপত্তা কি আরো নিরাপদ হবে? আমি মনে করি সমস্যার সমাধান হতে পারে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বিরুদ্ধে এর আগে যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তাতে ওইসব দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক জটিল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের জনজীবন কঠিন হয়েছে। ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না চীন ও অন্য ‘পার্টিগুলো’ বৈধ অধিকার ও স্বার্থকে খর্ব করা।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এর জবাবে ওই সময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল। তদুপরি সাইবার হামলা, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, পারমাণবিক অস্ত্র নিষ্ক্রিয়করণ এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বেআইনি বাণিজ্য করার অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অনেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র : mzamin