ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা
আন্তর্জাতিক

ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা

প্রতীকী ছবি

শীতের কথা বিবেচনা করে জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস স¤প্রতি অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করে। মিত্র জোটের এ সিদ্ধান্তে গত মার্চের পর থেকে আবারো তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

গত শুক্রবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ব্যারেলপ্রতি ৮৮ ডলারের কাছাকাছি লেনদেন হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ। মহামারি শুরুর পর উৎপাদক জোট তাদের সবচেয়ে বড় আউটপুট থেকে উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেয়ার আগে থেকেই সরবরাহ ঘাটতির সংকেত ছিল। তাই ওপেক প্লাসের এ পদক্ষেপ বাজারকে আরো চাপে ফেলে দিয়েছে।

তিন মাস আগে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ১২০ ডলারে উন্নীত হয়। কিন্তু ডলারের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি, যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড সুদের হার বৃদ্ধি এবং মন্দার আশঙ্কায় স¤প্রতি পণ্যটির গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারে নেমে আসে। বাজারদর যাতে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়, সে লক্ষ্যেই উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানায় ওপেক প্লাস।

ড্যানিয়েল হাইনেসসহ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ব্যাংকিং গ্রুপ লিমিটেডের বিশ্লেষকরা বলেছেন, ওপেক প্লাসের উৎপাদন কমানোর পদক্ষেপ বাজারের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। অন্যদিকে ওপেক প্লাসের প্রধান সদস্য দেশ সৌদি আরব ক্রেতাদের তেলের মূল্যে ছাড় দেয়, যা এশিয়ায় নভেম্বরে চালানের জন্য তেলের দাম স্থির রাখে ও ইউরোপের জন্য বেশ খানিকটা কমিয়ে দেয়। যদিও তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীরা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তে এরই মধ্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

তবে আমেরিকার শীর্ষ জ্বালানি উপদেষ্টা আমোস হোচস্টাইন বলেছিলেন, হোয়াইট হাউস যতটা মনে করছে তেলের বাজারে ওপেকের এ সিদ্ধান্তের প্রভাব ততটা পড়বে না। মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক মর্গান স্ট্যানলি থেকে গোল্ডম্যান স্যাকস আশা করছে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারে ফিরে আসতে পারে। যদিও পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ও এর সহযোগীরা নভেম্বর থেকে প্রতিদিন দুই মিলিয়ন ব্যারেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সৌদি আরবের জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন হ্রাসের পরিমাণ ১ মিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ১ মিলিয়ন পর্যন্ত হতে পারে, কারণ কিছু সদস্য দেশ তাদের জন্য বরাদ্দকৃত কোটার তুলনায় বেশি উত্তোলন করছে।

উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির কারণে কঠিন হয়ে পড়েছে জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়ানো। তাই চলমান পরিস্থিতিতে ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারকে জ্বালানি তেলের ন্যায্যমূল্য হিসেবে দেখছে ওপেক প্লাস। বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে এ দাম সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারবে বলে মনে করছেন জোটটির বিশ্লেষকরা।

তবে রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা এবং বছরের শেষে চীনে জ্বালানি চাহিদার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের আগে ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত বাজারকে অস্থির করে তুলেছে।

Source link

Related posts

ফের তীব্র হচ্ছে আন্দোলন, দেশজুড়ে রাজভবন ঘেরাওয়ের ডাক কৃষকদের

News Desk

চীনের সিনোফার্মের টিকার অনুমোদন দিল ডব্লিউএইচও

News Desk

মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার উইঘুরের মুসলিমরা

News Desk

Leave a Comment