তুরস্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর ইস্তাম্বুলের প্রাণকেন্দ্র তাকসিম স্কয়ারে একটি নতুন মসজিদ উদ্বোধন করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। শুক্রবার মসজিদটি উদ্বোধন করে মুসল্লিদের সঙ্গে জুমাআর নামাজ আদায় করেন এরদোয়ান। এই মসজিদ উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
তাকসিম স্কয়ার দেশটির একটি ঐতিহাসিক স্থান। সেখানে আধুনিক তুর্কি প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতার্তুকের নামে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। ষাটের দশকের সেই স্থাপনা ভেঙে সেখানে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা করলে ২০১৩ সালে অনেকে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তবে ২০১৯ সালে সেটি ভেঙে ফেলা হয়। আর সেখানেই নির্মিত হলো মসজিদ।
তবে এখানে মসজিদ নির্মাণের সমালোচনাও করেছেন অনেকে। মসজিদ নির্মাণের মধ্যদিয়ে এরদোয়ান তার ক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন বলে সমালোচনা করেছেন অনেকে।
অবশ্য এখানে মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছের কথা এরদোয়ান অনেক আগেই বলেছিলেন। ১৯৯০ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র থাকাকালে তিনি সেখানে মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা করেন। তবে আইনি জটিলতা, নাগরিকদের বিক্ষোভ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে তার সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
এরপর ২০০২ সালে এরদোয়ানের দল ক্ষমতায় আসলে এই অঞ্চলে ধর্মীয় আধিপত্য বিস্তার শুরু হয়। এরদোয়ানের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৭ সালে এই মসজিদের নির্মাণ শুরু হয়। ২৮ মিটার প্রস্থের গম্বুজ ও দুটি মিনার বিশিষ্ট মসজিদটিতে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন।
অবশেষে গতকাল এই মসজিদের উদ্বোধন করলেন এরদেয়ান। সেখানে নামাজ আদায় করলেন মুসল্লিদের সঙ্গে। করনোর ঊর্ধ্বমুখি অবস্থার মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে নামাজের আয়োজন করা হয়।
মসজিদটি উদ্বোধন করে এরদোয়ান বলেন, ‘এখানে মসজিদ নির্মাণে বিঘ্ন ঘটতো না যদি সেসময় সন্ত্রাসীরা আমাদের বিপক্ষে অবস্থান না নিত। আমার বিশ্বাস এই মসজিদ শতাব্দী ধরে আমাদের শহরকে আলোকিত করবে।’
শুক্রবার সেখানে জুমাআর নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিরাও মসজিদ নির্মাণ করায় এরদোয়ানের প্রশংসা করেছেন। ৬০ বছরের বৃদ্ধ মেহমেত আলী কারাহাকিওগলু বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই মসজিদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কেউ তা নির্মাণ করতে পারেননি, কেবল এরদোয়ান তা পেরেছেন। তিনি আমার কাছে একজন বিশেষ ব্যক্তি। তাকসিম স্কয়ার এখন দেখতে অনেক সুন্দর। ৫০ বছর আগে তারা এটি নির্মাণ করতে পারতেন।